গর্ভাবস্থায় পাতলা পায়খানা হলে করণীয়।গর্ভাবস্থায় স্যালাইন খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় পাতলা পায়খানা (ডায়রিয়া) হলে একটু সচেতন থাকা জরুরি, কারণ শরীরে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) হয়ে পড়তে পারে, যা মা ও গর্ভস্থ শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
এক্ষেত্রে করণীয়

করণীয়:
পানিশূন্যতা এড়ানো:

  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
  • সাথে ওআরএস (ওরাল রিহাইড্রেশন সল্যুশন) খেতে পারেন।
  • ডাবের পানি, লবণ-চিনির শরবত বা স্যুপও উপকারী।
  • হালকা, সহজপাচ্য খাবার খান:
  • ভাতের মাড়, খিচুড়ি, সেদ্ধ আলু, কলা, টোস্ট ইত্যাদি।
  • খুব বেশি তেল-মসলাযুক্ত খাবার, দুগ্ধজাত খাবার বা অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন:
  • শরীর দুর্বল হয়ে পড়লে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি।
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন:
  • সংক্রমণ এড়াতে খাবার ও পানির বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
  • হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখুন।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:

  • যদি পাতলা পায়খানা ২৪ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয় বা জ্বর, পেটব্যথা, রক্তমিশ্রিত মল দেখা যায়, সঙ্গে বমি বা অতিরিক্ত দুর্বলতা অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন:

  • ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ডায়রিয়া থাকলে
  • প্রচুর পানিশূন্যতার লক্ষণ (মুখ শুকিয়ে যাওয়া, প্রস্রাব কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা)
  • রক্ত বা শ্লেষ্মা মেশানো মল
  • পেটব্যথা বা ক্র্যাম্প
  • জ্বর বা বমি

গর্ভাবস্থায় স্যালাইন খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় স্যালাইন খাওয়া নিরাপদ, বরং প্রয়োজন হলে এটা খাওয়াই উচিত।
বিশেষ করে যদি ডায়রিয়া, বমি, বা পানিশূন্যতার লক্ষণ থাকে, তাহলে শরীরের ইলেকট্রোলাইট ও তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে ওআরএস (ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন) বা ঘরে তৈরি স্যালাইন খাওয়া উপকারী।

কখন স্যালাইন খাওয়া উচিত:
  • পাতলা পায়খানা হলে
  • বমি হলে
  • প্রচণ্ড গরমে শরীর পানি হারালে
  • শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগলে
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে বা প্রস্রাব হলুদ গাঢ় হলে
কিভাবে খাবেন:
  • খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করবে শরীরের পানিশূন্যতার মাত্রার উপর।
  • পাতলা পায়খানার ক্ষেত্রে, প্রতিবার মলের পর প্রায় ১/২ - ১ গ্লাস (১০০-২০০ মি.লি.) ওআরএস পান করতে পারেন।
  • খুব বেশি পান করলেও সমস্যা নেই, তবে একবারে অনেকটা না খেয়ে চুমুক চুমুক করে খান।
সতর্কতা:
  • যদি স্যালাইন পাউডার থেকে বানান, তবে অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণ পানিতে গুলিয়ে নিন (১ লিটার পানিতে ১ প্যাকেট)।
  • মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন বা নোংরা পানিতে তৈরি স্যালাইন খাবেন না।
  • যদি ব্লাড প্রেশার হাই থাকে বা ডাক্তার লবণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলেছেন, সেক্ষেত্রে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সংক্ষেপে:
গর্ভাবস্থায় স্যালাইন খাওয়া নিরাপদ এবং প্রয়োজন হলে খাওয়াই উচিত। তবে যদি সন্দেহ থাকে বা বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

Post a Comment