জন্মদিন হচ্ছে জীবনের একটি বিশেষ দিন, যেদিন আমরা নতুন বছরে পা দিই। এটা শুধু বয়স বাড়ার বিষয় না, বরং নিজেকে উদযাপনের, প্রিয়জনদের ভালোবাসা পাওয়ার, এবং অতীত বছরের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ও ভবিষ্যতের জন্য নতুন আশা করার দিন।
জন্মদিনের মূল সৌন্দর্য হলো, এটা আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমরা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, কত মানুষ আমাদের ভালোবাসে। ছোট্ট একটা কেক, মোমবাতি, বা একটা আন্তরিক শুভেচ্ছা — এসবই মন ছুঁয়ে যায়।
শুভ জন্মদিন
– রেদোয়ান মাসুদ
শুভ জন্মদিন, শুভেচ্ছা তোমায়
সারাক্ষণ মুখখানি থাকুক হাসিময়,
একবিন্দু জলও না আসুক চোখের কোনায়
স্বপ্নআঁকা হৃদয়টি থাকুক গতিময়,
ভালো থাকুক প্রিয়জন সবসময়
এই কথা লিখে দিলাম প্রার্থনার খাতায়।
আমার এ জন্মদিন
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমার এ জন্মদিন-মাঝে আমি হারা
আমি চাহি বন্ধুজন যারা
তাহাদের হাতের পরশে
মর্ত্যের অন্তিম প্রীতিরসে
নিয়ে যাব জীবনের চরম প্রসাদ,
নিয়ে যাব মানুষের শেষ আশীর্বাদ।
শূন্য ঝুলি আজিকে আমার;
দিয়েছি উজাড় করি
যাহা-কিছু আছিল দিবার,
প্রতিদানে যদি কিছু পাই
কিছু স্নেহ, কিছু ক্ষমা
তবে তাহা সঙ্গে নিয়ে যাই
পারের খেয়ায় যাব যবে
ভাষাহীন শেষের উৎসবে।
শুভ জন্মদিন
- খোকন রেজা
শুভ কামনা নিরন্তর
তোমার জন্মদিনে
অনাগত আগামী হোক
নন্দি সঞ্জীবনে।
জন্মদিনে ঐকান্তিক
শুভেচ্ছা অফুরান
নৃত্যগীতি ছন্দে ভরুক
জীবন অনির্বাণ।
জন্মদিনের দিনটি তোমার
আনন্দ-উচ্ছাসে
কাটুক সজন সাথীর সাথে
উৎসবে উল্লাসে।
এ আনন্দ-প্রবাহ চলুক
প্রতিটি আগামী দিনে
প্রাণোচ্ছাসের অনুপ্রাসে
ধ্বনিত জয়গানে।
তোমার মায়ায় তোমার ছায়ায়
রেখো মোদের ঘিরে
আলোর বন্যা নামুক ধরায়
তোমার প্রভাকরে।
জন্মদিনের কবিতা
– জয় গোস্বামী
অসাধ্য নয়, কিছুই এখন
অসাধ্য নয় তোমার পক্ষে
নদীর উপর নৌকো রাখো
পুরুষ রাখো নারীর বক্ষে
মাঠের শেষে গাছটি রাখো
গাছটিতে হও নিষিদ্ধ ফল
পথিকজনকে দেখাও পথে
গুচ্ছ গুচ্ছ তরুণীদল
গ্রামের মধ্যে পথ পেতে দাও
পুষ্করিণী, পথের পাশে
নোটনরা সব নাইতে নামুক
কাপড় শুকোক দূর্বা ঘাসে
এসব যদি পারো ঠাকুর
এসো, আমার মাথায় চাপো
চূর্ণি নদী পার করে দিই-
সবার জন্য অন্ন মাপো!
জন্মদিনের ফুল
শ্রীজাত
কখনও লাস্য, কখনও লড়াই তুমি।
ভেঙেছিলে মিথ, মিথ্যের কারিগরি
অক্ষর স্থায়ী। কলমেরা মরসুমি।
আমরা এখনও তোমারই কবিতা পড়ি।
আগুনের পাশে এলাচদানার ঘ্রাণ
হরিণের পাশে রক্তের বিপ্লব…
তোমার লেখায় আবহমানের টান
চিরকালীনতা হিসেব রাখবে সব।
চুল বেঁধে নেওয়া বিকেলের মতো ফিকে
তোমার লেখায় মারণাস্ত্রের রোদ…
তবু তো হেঁটেছ রান্নাঘরের দিকে,
লেখার টেবিলে উঠে গেছে অবরোধ।
চল্লিশ চাঁদে কত আয়ু থাকে, বলো?
সব জুড়ে হয়, পুরুষকে লেখা চিঠি
সিন্ধুর মেয়ে, স্রোতে নিয়ে গেছে জলও
নুড়ি হয়ে আছে কথামানবী’র স্মৃতি।
তবুও লড়াই জারি থাকে কাছে দূরে
স্বপ্নের ঘাম মুছে নিতে পারে ঘুমই…
সভ্যতা ছোটে সময়ের খুরে খুরে,
পাশের ঘরেই লিখতে বসেছ তুমি।
চলে গিয়ে তবু ভালই করেছ, জানি।
এখন বুঝেছি, থেকে যাওয়া বড় ভুল।
কুড়োতে এসেছি, বাগানের সন্ধানী
সহজে ঝরে না, জন্মদিনের ফুল…
জন্মদিনে
শক্তি চট্টোপাধ্যায়
জন্মদিনে কিছু ফুল পাওয়া গিয়েছিলো।
অসম্ভব খুশি হাসি গানের ভিতরে
একটি বিড়াল একা বাহান্নটি থাবা গুনে গুনে
উঠে গেলো সিঁড়ির উপরে
লোহার ঘোরানো সিঁড়ি, সিঁড়ির উপরে
সবার অলক্ষ্যে কালো সিঁড়ির উপরে।
শুধু আমিই দেখেছি
তার দ্বিধান্বিত ভঙ্গি
তার বিষণ্ণতা।
জন্মদিনে কিছু ফুল পাওয়া গিয়েছিলো
এখন শুকিয়ে গেছে।
জন্মদিন
শঙ্খ ঘোষ
তোমার জন্মদিনে কী আর দেব এই কথাটুকু ছাড়া
আবার আমাদের দেখা হবে কখনো
দেখা হবে তুলসীতলায় দেখা হবে বাঁশের সাঁকোয়
দেখা হবে সুপুরি বনের কিনারে
আমরা ঘুরে বেড়াবো শহরের ভাঙা অ্যাসফল্টে অ্যাসফল্টে
গনগনে দুপুরে কিংবা অবিশ্বাসের রাতে
কিন্তু আমাদের ঘিরে থাকবে অদৃশ্য কত সুতনুকা হাওয়া
ওই তুলসী কিংবা সাঁকোর কিংবা সুপুরির
হাত তুলে নিয়ে বলব, এই তো, এইরকমই, শুধু
দু-একটা ব্যথা বাকি রয়ে গেল আজও
যাবার সময় হলে চোখের চাওয়ায় ভিজিয়ে নেবো চোখ
বুকের ওপর ছুঁয়ে যাবো আঙুলের একটি পালক
যেন আমাদের সামনে কোথাও কোনো অপঘাত নেই আর
মৃত্যু নেই দিগন্ত অবধি
তোমার জন্মদিনে কী আর দেবো শুধু এই কথাটুকু ছাড়া যে
কাল থেকে রোজই আমার জন্মদিন।
"ছোট্ট সোনার শুভ জন্মদিন"
তানজিমা
হাঁটি হাঁটি পা পা করে চলে গেলো তিনটি বছর
পুরোনো বছর চলে গিয়ে আবারও তোমার,
জীবনে এসেছে নতুন আরও একটি বছর
সেই বছরকে স্বাগত জানিয়ে শুরু হয়েছে
আমার ছোট্ট সোনার আরও একটি
শুভ জন্মদিন।
এই দিনটি তোমার জীবনে যেমন
গুরুত্বপূর্ণ,
তেমনি এই দিনটি আমার জীবনেও
খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এই দিনে তুমি আমার কোল আলো করে
এসেছিলে আমার মুখে হাসি ফোঁটাতে
তাইতো আজ জন্মদিন তোমার।
বসন্তের ফুলের সুভাস ছড়িয়ে
সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে,
তুমি এই দিনে এসেছিলে
আমার ঘরে ফুলের সুভাস ছড়াতে।
তাইতো আজ জন্মদিন তোমার।
যখন তোমার মুখটি দেখে
সব কষ্টে ভুলে গিয়ে,
তোমায় কোলে নিয়ে
চুমু খেয়েছি, সেই অনুভূতি
কখনো ভুলার নয়।
তাইতো এই দিনটি আমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ
কারণ এই দিনে তুমি এসেছিলে
আমার কোল আলো করে।
তাই তো আজ জন্মদিন তোমার।
এভাবেই যেন প্রতিটা বছর
বারবার তোমার জীবনে ফিরে আসে
উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে।
সবসময় যেন হাসিখুশিতে
ভরে থাকে তোমার
এই সুন্দর জীবন।
এই দোয়া কামনা করি
বাবা তোমার জন্য।
আজ শুভ জন্মদিন তোমার
তাই সুন্দর এই পৃথিবীতে সুন্দরতম
জীবন হোক তোমার,
পূরণ হোক প্রতিটি স্বপ্ন,প্রতিটি আশা,
বেঁচে থাকো হাজার বছর ধরে।
এই দোয়া কামনা করি
বাবা তোমার জন্য।