কোটা আন্দোলন নিয়ে বক্তৃতা
সম্মানিত অতিথি ও প্রিয় শ্রোতাবৃন্দ,
আসসালামু আলাইকুম।
আজ আমি কোটা আন্দোলন নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। এটি আমাদের দেশের শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক আন্দোলন, যা আমাদের চিন্তা ও নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণে একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
কোটা ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান। এটি মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, নারী, উপজাতি এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য একটি বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। তাদের প্রধান দাবি ছিল, মেধার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান নিশ্চিত করা।
২০১৮ সালে শুরু হওয়া কোটা আন্দোলন মূলত একটি ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত ছিল। তারা পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল কোটা পদ্ধতির সংস্কার। তাদের বক্তব্য ছিল, মেধাবী শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই কোটা ব্যবস্থার কারণে বঞ্চিত না হয়।
এই আন্দোলন আমাদের জাতীয় জীবনে একটি বড় বার্তা দিয়েছে—তা হলো, যুব সমাজ শুধু তাদের নিজস্ব স্বার্থ নয়, বরং ন্যায় ও সুশাসনের জন্য সচেতন। তরুণ প্রজন্মের এই উদ্যোগ প্রমাণ করেছে যে, তারা দেশের কল্যাণে এবং সমতার জন্য একতাবদ্ধ হতে পারে।
তবে, আমাদের এটাও বুঝতে হবে যে কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করাই সব সমস্যার সমাধান নয়। কারণ, সমাজের প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোর জন্য বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি করা এখনও প্রাসঙ্গিক। তাই, একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও মেধাবান্ধব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।
সম্মানিত শ্রোতারা,
কোটা আন্দোলন আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা এবং শিক্ষার্থীদের শক্তিশালী নেতৃত্বের উদাহরণ। এটি আমাদের দেখিয়েছে যে, যৌক্তিক দাবির পক্ষে দাঁড়িয়ে কীভাবে পরিবর্তন আনা যায়। আমাদের উচিত এই আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি সুষম, ন্যায়সঙ্গত এবং মেধানির্ভর সমাজ গঠন করা।
পরিশেষে, আমি বলতে চাই—কোটা আন্দোলন শুধু একটি ঘটনা নয়, এটি আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি শিক্ষণীয় অধ্যায়। আমরা যেন এর থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের পথচলা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
ধন্যবাদ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
সম্মানিত সভাপতি, প্রিয় শিক্ষকবৃন্দ এবং শ্রদ্ধেয় শ্রোতাগণ,
আসসালামু আলাইকুম।
আজকের এই অনুষ্ঠানে আমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়—কোটা আন্দোলন নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। এই আন্দোলন আমাদের দেশের ছাত্রসমাজের গণতান্ত্রিক চেতনাকে প্রকাশ করেছে এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য তাদের সচেতনতা ও সংগ্রামের একটি উদাহরণ।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা বহুদিন ধরে প্রচলিত। এটি মূলত মুক্তিযোদ্ধা, নারী, উপজাতি এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য একটি বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। যদিও এর উদ্দেশ্য ভালো ছিল—সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের উন্নতির সুযোগ করে দেওয়া—কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি বিতর্কিত হয়ে ওঠে।
২০২৪ সালের কোটা আন্দোলন ছিল মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে একটি ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলন। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে প্রধান দাবি ছিল সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করা।
এই আন্দোলন আমাদের জাতীয় জীবনে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে। এটি দেখিয়েছে যে, তরুণ প্রজন্ম কেবল তাদের স্বার্থ নয়, বরং ন্যায়বিচার এবং সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে প্রস্তুত। এই আন্দোলনের প্রধান শিক্ষণীয় বিষয় হলো, যৌক্তিক দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠিত প্রচেষ্টা কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে, আমাদের বুঝতে হবে যে কোটা ব্যবস্থা একেবারে বাতিল করা সমস্যার সমাধান নয়। কারণ সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা প্রয়োজন। তাই মেধা এবং প্রান্তিকতার মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখা অপরিহার্য।
কোটা আন্দোলনের সাফল্য ও শিক্ষা:
সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি শুনে ২০২৪ সালের ১১ এপ্রিল কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের ঘোষণা দেয়। যদিও প্রক্রিয়াটি ধীরে এগিয়েছে, এটি আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।
প্রিয় শ্রোতারা,
কোটা আন্দোলন শুধুমাত্র একটি আন্দোলন নয়, এটি ছিল একটি ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম। এটি প্রমাণ করেছে যে, তরুণ প্রজন্মই দেশের শক্তি এবং ভবিষ্যৎ। আমরা যদি এই উদ্যমকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারি, তবে আমাদের সমাজে আরও অনেক পরিবর্তন সম্ভব।
পরিশেষে, আমি বলতে চাই—এই আন্দোলন আমাদের শিখিয়েছে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন এবং আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। আমাদের উচিত এই আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি সুষ্ঠু, ন্যায়সংগত এবং মেধাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
ধন্যবাদ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।