এইচএমপিভি (HMPV) হলো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (Human Metapneumovirus) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি একটি শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস যা শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক এবং বৃদ্ধদের মধ্যে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের কারণ হতে পারে।
লক্ষণ:
এইচএমপিভি সাধারণ ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
- নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে পানি পড়া
- কাশি
- জ্বর
- গলা ব্যথা
- শ্বাসকষ্ট
- ক্লান্তি
- কানে ব্যথা
আক্রান্ত গ্রুপ:
- শিশু ও নবজাতকরা সাধারণত বেশি আক্রান্ত হয়।
- বয়স্ক ও দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
- এটি গভীর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ যেমন নিউমোনিয়া এবং ব্রঙ্কিওলাইটিসের কারণ হতে পারে।
সংক্রমণ পদ্ধতি:
- এই ভাইরাসটি হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়ায়।
- স্পর্শ (কোনো সংক্রমিত ব্যক্তি বা বস্তু স্পর্শ করার মাধ্যমে) থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে।
- এই ভাইরাসটি শীতকাল এবং বসন্তে বেশি সংক্রমণ ঘটায়।
প্রতিরোধ:
- নিয়মিত হাত ধোয়া
- মুখে মাস্ক পরা
- আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকা
- সংক্রমিত অবস্থায় বিশ্রাম নেওয়া এবং অন্যদের সংক্রমণ থেকে বিরত থাকা।
এইচএমপিভি (HMPV) ভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে ছড়ায়। এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানোর কয়েকটি সাধারণ উপায় আছে:
১. হাঁচি-কাশির মাধ্যমে
- যখন সংক্রমিত ব্যক্তি হাঁচি বা কাশি দেন, তখন ভাইরাসযুক্ত ড্রপলেট বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
- কাছাকাছি অবস্থান করলে অন্য ব্যক্তির নাক বা মুখের মাধ্যমে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
২. সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা
- সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে হাত মেলানো বা স্পর্শ করার মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
- মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করলে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
৩. সংক্রমিত বস্তু বা পৃষ্ঠ স্পর্শ করা
- যদি কেউ ভাইরাসযুক্ত বস্তু বা জায়গা (যেমন: দরজার হাতল, মোবাইল ফোন) স্পর্শ করে, তারপর মুখ বা নাক স্পর্শ করে, তবে সংক্রমণ হতে পারে।
৪. ঘনিষ্ঠ পরিবেশে থাকা
- পরিবার, স্কুল বা হাসপাতালের মতো জায়গায় ভাইরাস দ্রুত ছড়াতে পারে।
কোন সময় বেশি ছড়ায়?
- এইচএমপিভি সাধারণত শীতকাল এবং বসন্তকালে বেশি সক্রিয় থাকে, অনেকটা ফ্লুর মতো মৌসুমি প্রবণতা দেখা যায়।
প্রতিরোধের উপায়:
hmpv ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়
এইচএমপিভি (HMPV) ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। তবে সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং ছড়িয়ে পড়া রোধে কিছু কার্যকর উপায় আছে।
এইচএমপিভি থেকে বাঁচার উপায়:
১. ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা
- নিয়মিত হাত ধোয়া (কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান এবং পানি দিয়ে)।
- অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন যদি হাত ধোয়ার সুযোগ না থাকে।
চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
২. হাঁচি-কাশির সঠিক শিষ্টাচার মেনে চলা
- কাশি বা হাঁচির সময় টিস্যু বা কনুই দিয়ে মুখ ঢাকুন।
- ব্যবহৃত টিস্যু তৎক্ষণাৎ ফেলে দিন এবং হাত ধুয়ে ফেলুন।
৩. সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা
- অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।
- রোগের উপসর্গ দেখা দিলে বিশ্রাম নিন এবং অন্যদের থেকে আলাদা থাকুন।
৪. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
- নিয়মিত দরজার হাতল, মোবাইল, টেবিল ও অন্যান্য বহুল ব্যবহৃত জিনিসপত্র পরিষ্কার করুন।
- খেলনা এবং শিশুদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র জীবাণুমুক্ত রাখুন।
৫. শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নেওয়া
- শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের বিশেষভাবে সুরক্ষিত রাখুন।
- এইচএমপিভি শিশুদের নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কিওলাইটিসের কারণ হতে পারে, তাই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৬. মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলুন
- ভাইরাসের মৌসুমে (শীত ও বসন্তে) মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলা ভালো।
- স্কুল, হাসপাতাল বা জনসমাগম স্থানে সচেতন থাকুন।
এইচএমপিভি সংক্রমণ হলে করণীয়:
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং শরীর হাইড্রেট রাখুন।
- জ্বর বা ব্যথা হলে প্যারাসিটামল বা অন্যান্য ওষুধ নিন (ডাক্তারের পরামর্শে)।
- শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- প্রতিরোধই এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষার প্রধান উপায়।