যৌনতা বিষয়ক কবিতা মানুষের আবেগ, আকাঙ্ক্ষা এবং ঘনিষ্ঠতার সূক্ষ্ম প্রকাশ। এটি ভালোবাসা, কামনা ও শরীরী অনুভূতির গভীর ভাষা বহন করে। যৌনতা, যা একসময় সমাজে ট্যাবু ছিল, আজ কবিতায় স্বাধীনভাবে স্থান পাচ্ছে। সমসাময়িক কবিরা এটি শুধুমাত্র শরীরের চাহিদা হিসেবে নয়, বরং সম্পর্কের গভীরতা, আত্মার সংযোগ ও মানবিক অভিজ্ঞতা হিসেবে তুলে ধরেন।
যৌনতা নিয়ে লেখা কবিতা প্রেমের অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলোকে সুন্দর ও কাব্যিকভাবে উপস্থাপন করে। অনেক সময় এই কবিতাগুলো শারীরিক সংযোগের বাইরেও মানসিক ও আত্মিক সংযোগের প্রতিফলন ঘটায়। ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিমের কবিতায় যেমন প্রেম ও যৌনতার সূক্ষ্মতা ধরা পড়ে, তেমনি হুমাযুন আজাদ বা শামসুর রাহমানের কবিতায় কামনার প্রকাশ সুস্পষ্ট।
এই ধরনের কবিতা মানব অভিজ্ঞতার স্বাভাবিক একটি অংশকে প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং সমাজে যৌনতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা গড়ে তোলে। এটি শুধু শারীরিক বিষয় নয়, বরং আত্মার গভীর আকাঙ্ক্ষা, ভালোবাসা ও সম্পর্কের নির্যাস হিসেবে পাঠকের মনে দাগ কাটে। যৌনতা বিষয়ক কবিতা তাই সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সৌন্দর্যময় অংশ।
সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে
হুমায়ুন আজাদ
আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।
সবচে সুন্দর মেয়ে দুইহাতে টেনে সারারাত
চুষবে নষ্টের লিঙ্গ; লম্পটের অশ্লীল উরুতে
গাঁথা থাকবে অপার্থিব সৌন্দর্যের দেবী। চ’লে যাবে,
কিশোরীরা চ’লে যাবে, আমাদের তীব্র প্রেমিকারা
ওষ্ঠ আর আলিঙ্গন ঘৃণা ক’রে চ’লে যাবে, নষ্টদের
উপপত্নী হবে। এই সব গ্রন্থ শ্লোক মুদ্রাযন্ত্র
শিশির বেহালা ধান রাজনীতি দোয়েলের স্বর
গদ্য পদ্য আমার সমস্ত ছাত্রী মার্ক্স-লেনিন,
আর বাঙলার বনের মত আমার শ্যামল কন্যা-
রাহুগ্রস্থ সভ্যতার অবশিষ্ট সামান্য আলোক
আমি জানি তারা সব নষ্টদের অধিকারে যাবে।
স্তন
খালেদ মতিন
আমি কবি, শিল্পী তাই
অতি প্রাচীন বিলাসের মত
আদি অনাদি অকৃত্রিম
অগাধ স্তনযুগলের
বন্দনা করি তোমার
নারীর সুপুষ্ট স্তন বিলাসেই
কবির কবিতা
কোণারক, মোহন শিল্প অজন্তার
রুবেন্স আর পিকাশোর
ললিত আঁকা ছবি
ল্যাগেজ ভ্যানে নরম তুলোর মত
বেফাঁস লাফিয়ে আসা যুগলচঞ্চু
উন্মুখ স্তনেই জন্ম নেয় মহান শিল্প
কাব্যের ললিত সাপখেলা
নারীর সুপুষ্ট স্তনবিলাসেই
রক্তবীর্য
স্নায়ুঘাত
লৌহপেশী
উদ্দাম পুরুষকার স্তনেই উজ্জীবিত
তোমার স্তন
জাহিদুল ইসলাম সবুজ
তোমার অল্পবয়েসি স্তনের পরতে পরতে
আমার মৃত্যু।
তোমার স্তনের বোটায় মৃগনাভীর সুগন্ধের পসরা।
তোমার স্তনের দুলুনিতে
ধরণী কেপে ওঠে থেকে থেকে।
স্তনযুগল তোমার খোলা আদিম থাকার সময়,
আমি নেশায় পাগল হয়ে যাই।
সেই সুখ
আবুল হাসান
সেই সুখ মাছের ভিতরে ছিল,
সেই সুখ মাংসের ভিতরে ছিল,
রাতের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যেতো ছেলেবেলা
সেই সুখ চাঁদের ভিতরে ছিল,
সেই সুখ নারীর ভিতরে ছিল !
নারী কোন রমণীকে বলে ?
যার চোখ মুখ স্তন ফুটেছে সেই রমণী কি নারী ?
সেই সুখ নারীর ভিতরে ছিল,
যখন আমরা খুব গলাগলি শুয়ে
অনু অপলাদের স্তন শরীর মুখ উরু থেকে
অকস্মাৎ ঝিনুকের মতো যোনি,
অর্থাৎ নারীকে আমরা যখোন খুঁজেছি
হরিণের মতো হুররে দাঁত দিয়ে ছিঁড়েছি তাদের নখ, অন্ধকারে
সেই সুখ নারীর ভিতরে ছিল।
যখন আমরা শীতে গলাবন্ধে পশমী চাদর জড়িয়েছি
কিশোরীর কামরাঙা কেড়ে নিয়ে দাঁত বসিয়েছি
সেই সুখ পশমী চাদরে ছিল, কামরাঙা কিশোরীতে ছিল !
রঙীন বুদ্বুদ মাছ, তাজা মাংস, সুপেয় মশলার ঘ্রাণ;
চিংড়ি মাছের ঝোল যখোন খেতাম শীতল পাটিতে বসে
সেই সুখ শীতল পাটিতে ছিল।
প্রথম যে কার ঠোঁটে চুমু খাই মনে নেই
প্রথম কোনদিন আমি স্নান করি মনে নেই
কবে কাঁচা আম নুন লঙ্কা দিয়ে খেতে খেতে
দাঁত টক হয়েছিল মনে নেই
মনে নেই কবে যৌবনের প্রথম মিথুন আমি ঘটিয়েছিলাম
মনে নেই…
যা কিছু আমার মনে নেই তাই হলো সুখ !
প্রণয়হীন সঙ্গম
- জাহিদ হাসান নাদিম
তখনও প্রণয় গড়ে ওঠেনি আমাদের, তবুও রাতের নির্জনতায় হয়েছিল সঙ্গম।
তোমার নাকে জমেছিল বিন্দু বিন্দু ঘাম, যৌনতার চাপা গন্ধে ভরেছিল ঘর,
তোমার নি:শব্দে ফেলা গরম নি:শ্বাস ছুঁয়েছিল আমার নগ্ন শরীর,
কাঁচের জানালা ভেদ করে বন্ধ ঘরে এসেছিল চাঁদের আলো, ছড়িয়েছিল সিগ্ধতা,
নগ্ন শরীরের উত্তাপে ভরেছিল বন্ধ ঘর, ভুলিয়েছিল প্রণয়ের রিক্ততা।
তখনও প্রণয় গড়ে ওঠেনি আমাদের, তবুও রাতের নির্জনতায় হয়েছিল সঙ্গম।
সে বিয়েতে তোমার আমার কারোর মতই ছিল না, প্রণয় তো অনেক দূরের কথা,
তবুও বিয়ে হয়েছিল পরিবারের ইচ্ছায়, হয়েছিল নামমাত্র বাসর,
তাদেরই চাপে সন্তান জন্মদিতেও বাধ্য হয়েছিনু আমরা বছর চারেক পর,
সব বুঝি আমি, সে প্রেমহীন সঙ্গমে তোমার যোনিতে হয়েছিল কত ব্যথা।
অনভিজ্ঞ শিশ্ন তোমার লেবিয়া মেজরা ও লেবিয়া মাইনরা হয়ে ভেদ করেছিল যোনি,
তোমার যোনিপথের ক্লাইটোরিসও সে সঙ্গমকে আনন্দঘন করতে পারেনি।
তখনও প্রণয় গড়ে ওঠেনি আমাদের, তবুও রাতের নির্জনতায় হয়েছিল সঙ্গম।
শুক্রানুগুলো খুঁজে ফিরেছিল তোমার ডিম্বানু, খোঁজ নিয়েছিনু তোমার রজ:চক্রের,
তোমার স্তনের ভাজে পুন: পুন: ফেলেছিনু নি:শ্বাস, ঠোঁট ছুঁয়েছিল স্তনের বোটা,
শিশ্নমূল বার বার ঘর্ষনে মিলেছিল তোমার মন্স ভেনেরিসের সাথে।
তোমার উলটানো নাশপতির মতো মাংসল জরায়ু শুক্রানুকে করেছিল আহ্বান,
আর তোমার চোখে ঝড়েছিল অশ্রু, হাসিখুশি চাঁদ মুখখানি হয়েছিল ম্লান।
আর আমি প্রথমবারের মত কোন নারীর শরীরের সান্নিধ্যে এসেছিনু সে রাতে।
খানিক ভালবাসা জমেছিল, হয়েছিনু মুগ্ধ সে শরীরে, রিক্ততায় পড়েছিল ভাটা,
এ চোখে আজও ভেসে ওঠে সে যোনি, বহু স্মৃতি এখনও রয়ে গেছে এ মনে সে রাতের।
তখনও প্রণয় গড়ে ওঠেনি আমাদের, তবুও রাতের নির্জনতায় হয়েছিল সঙ্গম।
যৌনতার উত্তেজনায় আমার শিশ্ন দ্রুত থেকে আরও দূত হয়ে ওঠেছিল,
শরীরের মোচড়ে খামচে ধরছিলে আমায়, অস্পষ্ট আত্মনাদ কানে এসেছিল।
সে আত্মনাদে কেঁপে উঠেছিল ঘর, রাত, আকাশ, সমুদ্র, অরণ্যানী,
কেঁপে উঠেছিল আমার শিশ্ন, বীর্জের স্রোতে ভেসেছিল তোমার যোনি।
বীর্জের শেষ বিন্দুও প্রবেশ করেছিল তোমার যোনিতে, পূর্ণ হয়েছিল সঙ্গম,
তখনও প্রণয় গড়ে ওঠেনি আমাদের, তবুও রাতের নির্জনতায় হয়েছিল সঙ্গম।
আজ বহুবছর পর সে উচু স্তন আর নেই তোমার, ঝুলে পড়েছে বয়সের ভারে,
তবুও আর কখনই আরও একটি তেমন রাত চাইতে পারিনি তোমার দ্বারে।
সে যোনিতে নেই আর সেরকম শুক্রানু শুষে নেওয়ার অভাবনীয় তেজ,
তবু এ শিশ্ন সে যোনি আরও একবার বীর্জের ছোঁয়ায় নিজের করে নিতে চায়,
সে ঠোঁট, টানা টানা চোখ, মেদহীন পেট গত তিনযুগে হারিয়ে ফেলেছো অবলীলায়,
তবুও আর কখনই ছুঁতে বলোনি আমায় সে শরীর, অভিনয়ে দিয়েছো সংসারের আমেজ।
কখনও ভালবেসেছি কিনা জানিনা, তবু সংসার করেছি বহুকাল এক সাথে,
কখনও সে সঙ্গম তোমার মনে পড়ে কিনা জানিনা, তবে এ মন পড়ে আছে সে রাতে।
সে রাতে প্রয়োজনে যৌনতায় মিলেছিনু দুজন, অনিচ্ছা সত্বেও হয়েছিল সঙ্গম,
এখনও প্রণয় গড়ে ওঠেনি আমাদের, তবুও সে রাতের নির্জনতায় হয়েছিল সঙ্গম।
যৌনতার কবিতা
সৈয়দ আহাম্মদ উপল
আকাশ যখন ছুঁয়ে দেয় পাহাড়ের চূড়া,পাহাড় শিউরে ওঠে।
তারপর পাহাড় আকাশ স্পর্শে প্রজাপতি হয়, হরিণীর মত ছুটে বেড়ায়।
আকাশ আরো নীচে নেমে আসে
স্পর্শাতীত সুখে ঝাঁপটে ধরে
পাতারা ছন্দ তুলে
মেঘেরা ফেলে ঘন ঘন শ্বাস।
এলোমেলো চুলে বাতাস উড়ে।
পাহাড় কুঁকড়ে যায়, শীতে খামছে ধরে লতা পাতা গাছেদের শেকড়।
গাছেরা আরো শব্দ তুলে শনশন
আকাশের লেহন আর মেঘেদের গর্জন। তারপর বৃষ্টি আসে,
এই সঙ্গম যৌনতা কিনা জানিনা?
তবে নদী যদি নারীই হয়
তবে এই সঙ্গম শেষে আমি দেখেছিলাম অতৃপ্ত শুকনো নদী ভরে যেতে।
অশ্লীল কবি আর অশ্লীল মানুষ এক নয়........
কবির উদ্দেশ্য পাঠকের দৃষ্টি তার লেখার মধ্যে আটকে রাখা....
পাঠকের মনোরঞ্জনের জন্য কবি তার লেখায় নগ্নতা অশ্লীলতা নিয়ে আসতেই পারেন। তাই বলে কবি সে অশ্লীল মানুষ নয়।
আমাকে কিছু নগ্নতা দাও , আমি নির্মলেন্দু গুন্ হয়ে যাবো।
আমাকে একজন বনলতা সেন দাও , আমি জীবনানন্দ হয়ে যাবো।
আমাকে একরাশ বেদনা দাও , আমি নজরুল হয়ে যাবো।
অতঃপর হে প্রিয়তমা চারুলতা ,
তুমি আমার পাশে থাকো, আমি সবাইকে ছাড়িয়ে যাবো।
ভালবাসা-যৌনতা
- ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম
চুমাচুমি মাখামাখি করতাম
তোর পা হতে মস্তক
আলতো করে ছুয়ে দিতাম!
চুমোয় চুমোয় তোর সারা অঙ্গে
ভালবাসা লেপন করে দিতাম।
তোর শিহরিত অঙ্গ
বারংবার চুম্বন করতে আওভান করত?
তুই চোখ নিমীলিত করে
ভালবাসার স্বপ্ন দেখিতি
প্রাণ ভরে ভালবাসার নিঃশ্বাস নিতি!
তুই খিল খিল করে হাসতি
আমায় বুকে জড়িয়ে রাখতি
তোর টইটম্বুর স্ফীত নিতম্ব থেকে
ভালবাসার মধু আহোরণ করতাম?
মাঝে মাঝে তুই পাগলা ঘোড়ার মতো
টগবগিয়ে উঠতি!
আর আমায় কাছে ডাকতি
আমি তোর বগল,উদর আলতো করে ছুঁয়ে দিতাম!
এক পর্যায়ে তুই নিঃতেজ হয়ে পড়তি....
প্রাপ্তবয়স্ক কবিতা
- ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম
বালিকা তোমার যৌবন
নদীর পানি করতে চাই পান,
তোমার যৌবন নদীর পানি খেলে
সব কষ্টের হবে অবসান।
বালিকা তোমার যৌবন নদীর
দ্বার দাও খুলে,
চুমে চুমে শেষ করবো পানি
তোমার যৌবন নদী টেউ যাবে ভুলে।
বালিকা তোমার যৌবন নদীর পানি
সব সময় পান করিতে চাই,
তোমার যৌবন নদীর পানি ছাড়া
কোথাও কোন শান্তি নাই।
'স্তন'
সৌরভ ভূইয়াঁ
ভগবান সৃষ্ট এ অপার সৌন্দর্য !
রাখিবে কোথায় তাহারে ?
অবলা জাতি বলিয়া, সে তাহা -
রাখিয়াছে তাহার বক্ষ ভরে ।
সৌন্দর্যের প্রতীক সেটি,
তাহার মুল্ধন;
শক্তিশালী পুরুষ জাতি -
করে তাহা মন্থন।
ছলাকলার কেন্দ্র সেটি ,
ইশারায় ডাকে ।
বর্বর পুরুষ সর্বদাই -
তারই পানে চেয়ে থাকে।
লজ্জায় নারী বসন ঢাকে
তাহার কারণে -
পাছে পুরুষ লোভ দেয় -
অতি গোপন স্থানে।
যৌনতার কেন্দ্র সেটি,
আনন্দের মুল।
তাকে মন্থন করাই হল -
পুরুশত্তের একমাত্র গুণ ।
বর্ণনা কি করিব তাহার,
কবির ভাষায় সেটি -
'উপুড় করা ছোট্ট দুটি নারকোলের মালা,
তার উপরে সদ্য ফোটা বকুল ফুলের কুঁড়ি।'
অন্য কিছু নয় যে সেটি,
ছোট্ট মাংসপিণ্ড -
তাই দেখেই পুরুষ সব
পশুর মতো হিংস্র।
যৌনতার কেন্দ্র সেটি -
পুরুশ-নারির জন্য,
কখনও আবার কেন্দ্রীভূত প্রাণ সেটি -
গর্ভবতী নারীর জন্য।
সদ্যজাত'র খাদ্য সে যে -
যোগায় খনে খনে;
বিধাতার শ্রেশঠ সৃষ্টি
সবাই তাহা জানে।
তারই বলে, আজ অবলা
হয়েছে সবলা,
তারই বলে, আজ অবলা
হয়েছে গৃহ কমলা।
তারই বলে, নারী পুরুষ -
এত ভেদাভেদ;
তারই বলে, পৃথিবীতে
আজ শান্তির ছেদ।
পৃথিবীতে আজ যতই
ধরশন-কুকাজ চলে
তার মুলে রয়েছে সে যে,
প্রতিটি ক্ষণে।
ভগবান সৃষ্ট সে যে,
অষ্টম আশ্চর্য ;
নারিজগতের সে যে এক
অপার ঐসচরজ্য।
বর্বর পুরুষ সর্বদাই তাকে পেতে চায়;
কারণ সে যে -
নারিজাতের একমাত্র মুল্ধন
নারীপুরুষ সবাই জানে -
তাহার নাম 'স্তন' ।
উষ্ণ প্রেমের দীঘল পথ
- মনিরুজ্জামান জীবন
উষ্ণ প্রেমের দীঘল পথে
দেখি তুমি আছো ঝিকিমিকি রোদের সাথে মিশে ,
আছো তুমি ঐ নীল দিগন্ত শেষে।
মেঘের চোখে তাই দেখি তোমায় খুঁজে পাই তার প্রতি
কোন এক জোসনা ভেজা রাতে ,
সারাটা ঘর ভরেছিলো স্বপ্ন মেঘে।
মানব মনে জাগিয়ে দিয়ে যায় যেন প্রেমবোধে
অনেক রঙের অনেক ফুলে ফুলে ,
এপাশ ওপাশ ছেয়ে গেছে ।
তোমার ভালোবাসার রুপ রস গন্ধে
চিত্ত আকুল হওয়া বালিকার মনে ,
নাম না জানা কারুর অরুপ মূর্তি আঁকা আছে ।
পিচ ঢালা মসৃণ পথে
তোমার উষ্ণ প্রেমের ঝলমল রোদে ,
বালক বালিকার ছায়া লেগে আছে ।
প্রানে দোলে অকারণ হর্ষ
কানে বাজে কোন প্রিয় গানের কথা ,
কারুর শূন্য প্রানে প্রেম হয়তো জাগিয়ে দিয়ে যায় ব্যথা !
ভালোবাসা আসে ফুলে ফুলে প্রকৃতির মাঝে
রাঙিয়ে দিয়ে যায় ,প্রেম জাগে মানব মনে
প্রেমবোধ জাগিয়ে দিয়ে যায় ।
রাতের উষ্ণতা
- উৎপল সরকার
আজও প্রতিটা রাত ঘিড়ে ধরে উষ্ণতায়...
শরীর বোঝেনা মনের কথা,মেতে ওঠে ব্যস্ততায় ৷
আজও প্রতিটা রাত ঘিড়ে ধরে উষ্ণতায় ৷৷
আজও প্রতিটা রাত আমার শহর জ্বলে যায়...
আর ধূলোমাখা ছাইটুকু ফিরে আসে কবিতায়,
শরীরটাও শূষ্ক হয়ে যায়,প্রকৃতির উষ্ণ হাওয়ায় ৷
মোনের কোনে কেমন যেন একটা চাওয়া...
আজ বার বার ঘিড়ে ধরে আমায়,আর আমার
ভবিৎষত পিষে দেয় যৌবনের শক্ত চাকায় ৷
আমি যেন আলোকিত ঘর ছেড়ে
অন্ধকারের খুটি ধরে বসে থাকি ৷
আর আমার ক্ষুধিত তৃষ্য হৃদয় ফুটন্ত
জলবিন্দুর মতই বেজে ওঠে চঞ্চলতায় ৷
চাহিদা যেন প্রকাশিত হয় অশ্লীল কবিতায়৷
নির্জন ঘরে আমার কোমল ওষ্ঠ কামড়ে
ক্ষত বিক্ষত করে দেয় উষ্ণ যৌবনতায় ৷
কেন আজও প্রতিটা রাত ঘিড়ে ধরে উষ্ণতায়
শরীর বোঝেনা মনের কথা,মেতে ওঠে ব্যস্ততায় ৷৷
আজও প্রতিটা রাত যেন শুনতে হয়...
উন্নিদ্র শরীরের যত আর্তনাথ ৷
জাতি ধর্ম অর্থ নির্বিশেষে শরীর ছুটে যায়
কেবলই শরীরি নেশায় ৷
তবু রাতের রজনীগন্ধা পরে থাকে নিস্থব্ধতায় ৷
ভদ্র সমাজে আমার কিছু কবিতারা ঠাই পায়
লাঞ্ছনায়,ব্যঞ্জনায় কটুবাক্যের অশ্লীলতায় ৷
তবু শরীর ছুটে শরীরি নেশায় ৷
যেন আজও জ্বলে যায় শরীরের রক্ত মাংশ
তবু শুকোয়না শরীরের ঘাম প্রবল উষ্ণতায় ৷
যেন দূর হতে ভেসে আসে ভন্ড কবির কলতান ,
ভদ্র পোষাকে সমাজ যেন করে দেয় ধূলিষ্যাদ
যেন পিষে যায় কবি চরম অবহেলায় ৷
কেন আজও প্রতিটা রাত ঘিড়ে ধরে উষ্ণতায়..
শরীর বোঝেনা মনের কথা,মেতে ওঠে ব্যস্ততায় ৷৷
কাম নিয়ে কবিতা
- ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম
তোমার কামরসের পুকুরে
হাবুডুবে খেতে চাই রাত-দুপুরে,
তোমার কামরস পুকুর
ঘুচে দেয় আমার ভালবাসার ঢেঁকুর।
তোমার কামরসের পুকুরে
প্রেমের ভূমিকম্পের ক্ষয়,
তোমার কামরসের কারসাজিতে
মন হয় তৃপ্তিময়....
তোমার কামরস পুকুরের
পানি খেতে চাই নিত্য,
তোমার কামরস পুকুরের
পানি নিত্য খেলে শান্ত থাকবে চিত্ত.....