জাস্টিন ট্রুডো কে।জাস্টিন ট্রুডো এর জীবনী।কানাডার সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী কে?

জাস্টিন ট্রুডো কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা। তিনি ২০১৫ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং এরপর থেকে পুনঃনির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

মূল তথ্য:

  • পুরো নাম: জাস্টিন পিয়েরে জেমস ট্রুডো
  • জন্ম: ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৭১
  • জন্মস্থান: অটোয়া, অন্টারিও, কানাডা
  • পিতা: পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো (কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী)
  • মা: মার্গারেট ট্রুডো
  • দল: লিবারেল পার্টি অফ কানাডা
  • প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ: ৪ নভেম্বর, ২০১৫

ক্যারিয়ার:

জাস্টিন ট্রুডো শিক্ষায় আগ্রহী ছিলেন এবং শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি পরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ট্রুডো সামাজিক ন্যায়বিচার, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই, এবং বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তির পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন।

ব্যক্তিগত জীবন:

ট্রুডো সোফি গ্রেগোয়ার ট্রুডোর সাথে বিবাহিত এবং তাদের তিন সন্তান রয়েছে। তিনি কানাডায় তরুণ ও উদারনৈতিক রাজনীতিবিদদের অন্যতম প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বর্তমানে রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। দলের অভ্যন্তরে এবং বিরোধী দলের চাপের কারণে তিনি লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে শিগগিরই পদত্যাগ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ট্রুডো ২০১৩ সাল থেকে লিবারেল পার্টির নেতা এবং ২০১৫ সাল থেকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে এবং দলের ভেতরেই তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (৫৪) গতকাল সোমবার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন, যা অনেকের কাছে প্রত্যাশিত হলেও তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রার এক চমকপ্রদ পরিণতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। একসময় এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন ট্রুডো যে কূটনৈতিক বৈঠকেও তাঁকে ঘিরে সেলফির ভিড় জমতো। প্রায় ২৫ বছর ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকা ট্রুডোর উত্থান-পতনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—


শুরুর দিন (২০০০)

১৯৭১ সালের ক্রিসমাস ডে’তে জন্মগ্রহণের পর থেকেই ট্রুডো ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রে। তাঁর বাবা পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো তখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। ২০০০ সালে বাবার স্মরণানুষ্ঠানে দেওয়া আবেগঘন ভাষণ ট্রুডোর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার ইঙ্গিত দেয়।

রাজনীতিতে প্রবেশ (২০০৮)

শিক্ষকতা থেকে রাজনীতিতে এসে ২০০৮ সালে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন ট্রুডো। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে সংসদে প্রবেশ করেন তিনি।

জনপ্রিয়তার উত্থান (২০১২)

২০১২ সালে এক চ্যারিটি বক্সিং ম্যাচে ট্রুডো কনজারভেটিভ দলের একজন ব্ল্যাক বেল্টপ্রাপ্ত নেতাকে পরাজিত করেন। এই জয় তাঁর জনপ্রিয়তাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে।

লিবারেল পার্টির নেতা (২০১৩)

২০১৩ সালে ট্রুডো লিবারেল পার্টির নেতৃত্বে আসেন। সেই সময় দলটি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত ছিল।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিষেক (২০১৫)

২০১৫ সালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেন ট্রুডো। তিনি একটি লিঙ্গসমতাভিত্তিক মন্ত্রিসভা গঠন করেন এবং নিজেকে নারীবাদী, পরিবেশবাদী এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় নিবেদিত নেতা হিসেবে পরিচিত করেন।

চ্যালেঞ্জ এবং কেলেঙ্কারি (২০১৭-২০১৯)

২০১৭ সালে নৈতিকতা কমিশন জানায়, ট্রুডো স্বার্থসংঘাত সম্পর্কিত নিয়ম ভেঙেছেন। ২০১৯ সালে একটি ফেডারেল আদেশে বলা হয়, এসএনসি-লাভালনির একটি মামলায় হস্তক্ষেপ করেছিলেন তিনি। যদিও পুনর্নির্বাচিত হন, তবে তাঁর দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়।

করোনা মহামারি এবং সংকট (২০২০-২০২২)

২০২০ সালে করোনাকালে তাঁর স্ত্রী ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ট্রুডো নিজেও আইসোলেশনে যান। মহামারির সময় কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করে জনশৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করেন। তবে ২০২২ সালে টিকা বিরোধী আন্দোলন তাঁর সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

সাম্প্রতিক সংকট (২০২৩-২০২৪)

বাসাভাড়া, মূল্যস্ফীতি এবং ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মুখে পড়েন ট্রুডো। ২০২৪ সালে ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন হারান এবং অভিবাসনসহ বিভিন্ন নীতিতে কঠোর অবস্থান নেন।

পদত্যাগের ঘোষণা (২০২৫)

নিজ দল এবং বিরোধীদের চাপের মুখে অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো। ২৫ বছরের রাজনৈতিক যাত্রায় এটি ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় পতনের সূচনা।

Post a Comment