ভালোবাসা দিবস, প্রেমের অনুভূতি প্রকাশের এক বিশেষ দিন। এই দিনে প্রিয়জনের জন্য মনের গভীর থেকে উৎসারিত ভালোবাসা প্রকাশ পেতে পারে কবিতার সুরে। কবিতা যেন মনের ভাষা, যা সহজেই স্পর্শ করে প্রিয়জনের হৃদয়।
আমাদের আজকের ব্লগে তুলে ধরা হয়েছে ভালোবাসা দিবসের সেরা কিছু প্রেমের কবিতা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে জীবনানন্দ দাশ কিংবা আধুনিক কবিদের রচনায়, প্রতিটি কবিতাই যেন ভালোবাসার এক অমূল্য প্রতিচ্ছবি। "আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে" কিংবা "তোমায় নতুন করে পাবার জন্যই এসেছি"—এসব কবিতা শুধু শব্দের খেলা নয়, বরং অনুভূতির গভীরতা।
ভালোবাসা দিবসের এই বিশেষ মুহূর্তে, প্রিয়জনকে পাঠাতে পারেন একটি ছোট কবিতা, যা প্রকাশ করবে আপনার হৃদয়ের আবেগ। আর যদি নিজে লিখতে চান, তবে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন আমাদের সেরা কবিতার সংগ্রহ থেকে।
তাহলে আর দেরি কেন? আজই ডুব দিন ভালোবাসার সেরা কবিতাগুলোর জগতে এবং ভালোবাসার ভাষায় রাঙিয়ে তুলুন প্রিয়জনের দিন।প্রিয় পাঠক আজ আমরা ভালবাসা দিবসের সেরা কবিতাগুলো পড়বো....
ভালবাসা দিবস
- মুহম্মদ কবীর সরকার
আজ পৃথিবী সজ্জিত
ফুলের গন্ধে মুখরিত,
রাজপথে, পার্কে তরুণ-তরুণীর দল,
সবার হাতে আজ গোলাপ ফুল।
বয়ে যাচ্ছে তাদের মনে ভালবাসার
জোয়ার,
আজ খোলা সত্যিই খোলা আবেগের
দোয়ার।
বিবেকহীন আবেগে দ্রুত বেগে
হচ্ছে ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ,
চোখের কালো চশমায় দেখে না
আশপাশ।
আজ নাকি সুপ্ত মনেও ভালাবাসার বাস।
ভালবাসায় কেউ দগ্ধ, কেউ মুগ্ধ
কেউ একদমই অন্ধ,
ভালবাসা কি আবেগ নাকি ত্যাগ,
নাকি বহো দিনের চাওয়া ফুলের গন্ধ।
তোমরা কি জান ভ্যালেন্টাইন কে?
কেন আজ এত সব,
কেন আজ তরুণ-তরুণীদের মনে বিবেকহীন
উৎসব?
উৎসর্গ করেছিল প্রাণ, রেখেছিল
ভালবাসার মান।
সেই ভ্যালেন্টাইন যাকে নিয়ে এত
গান।
আজ পৃথিবী সজ্জিত
ফুলের গন্ধে মুখরিত,
রাজপথে, পার্কে তরুণ-তরুণীর ঢল,
কিন্তু কেউ মুছে দেয়নি দুখিনীর
চোখের জল।
কিন্তু কেউ আসে নি তাদের পাশে,
কেউতো দেয়নি স্বান্তনা একটু
ভালবেসে।
ফুল পাওয়ার আশায় পেল ফুলের কাটা,
আজ সত্যিই ঘৃণা করে তারা ভালবাসার
কথাটা।
লাঞ্চিত নিপীরিত, দুঃখে জর্জরিত
মানুষের পক্ষ থেকে আমি অধম,
তবুও আজ ভালবাসা দিবস তোমাকে
জানায় স্বাগতম।।।।
টেডি বিয়ার দিবস (হ্যাপি টেডি ডে)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
গতকাল ছিল জানি টেডি বিয়ার ডে
স্মৃতি শুধু মনে রয়, আপনার হৃদে।
টেডি বিয়ার দিবস, শুন সর্বজন,
বিগত দিবস কথা, করিব বর্ণন।
প্রিয়জন যদি তব, হয় বড়ো জেদি,
আজিকার দিনে তারে কিনে দাও টেডি।
ভালবাসার বন্ধন না যায় খণ্ডন,
হৃদয়েতে থাকে লেখা বাঁধা রয় মন।
টেডি বিয়ার দিবস পূণ্য শুভক্ষণ,
টেডি উপহার দেয় সকলে এখন।
প্রিয়জনে দাও যদি টেডি উপহার,
নিশ্চয় হইবে খুশি প্রেয়সী তোমার।
পবিত্র দিবসে তাই সবে খুশি হয়,
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কবি, কবিতায় কয়।
-"তবুও তুমি নারী"--
এফ এইচ সবুজ।
নারী তুমি ছলনাময়ী,
তুমি জগৎ মমতাময়ী।
নারী তুমি সর্বনাশী
তুমি আসমান শশি।
নারী তুমি প্রলয়ঙ্কর
তুমি তছনছে সর্বগ্রাসী।
তুমি উন্নত ভালবাসা
তুমি ঘরের লক্ষী।
পুড়ে মারো তিলতিলে।
নারী তুমি অগ্নি।
নারী তুমি বেঈমানী
তুমি বড় পাষাণী।
নারী তুমি সেবিকা
তুমি নরের অর্ধাঙ্গীনি।
নারী তুমি স্বপ্নছারিনী
তুমি বিপদ সঙ্গিনী।
নারী তুমি শঙ্খিনী,
নাগিনী তুমি দংশিনী।
তুমি শীতল করা
চৈত্রী খরায় ছায়ারাণী।
তুমি নির্ঝরিনী তুমি
তার অশান্ত কল্লোল।
তুমি ভাঙ্গতে জানো
তুমি গড়তে জানো।
তুমি কখনো রুদ্রদীপ
কখনো শীতল বরফ।
কখনো তুমি অগ্নিমুর্তি
আবার গলীতো মোম।
তুমি যোগী সন্ন্যাসী
তুমি নীড়হীন পাখি।
তুমি সুখ বিলানি
তুমি সুখ ধরিত্রী।
তুমি কান্নার জল
তুমি দুঃখের তটিনী।
তুমি সুখ বিলাসী
তুমি দুঃখের দরদী।
তুমি বড় নিষ্ঠুর
তুমি স্পাত কঠিন।
তুমি পরশ পাথর
তুমি বুকেরও পাঁজর।
তুমি কষ্ট দাও
তুমি কষ্টে পুড়াও
তুমি এক অভাগী
সব পেয়েও হারাও।
তোমায় করি সম্মান
কারণ তুমি নারী।
তুমি নিরিহ অবলা
তুমি নিবেদিত প্রাণ
ভালো -খারাপ দূইয়েই
আছো তবু তুমি নারী।
তুমি জননী তুমি তনয়া
তুমি ভগ্নি, তুমি সহধর্মিণী।
"ভালবাসার ভুমিকা "
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন
ভালবাসা খেলনা নয়
ভালবেসে দিওনা কষ্ট,
ভালবাসার করোনা অভিনয়
ভালবেসে কারো জীবন করোনা নষ্ট।
ভালবেসে করোনা নয় ছয়
তা যদি হয় হবে পথ ভ্রষ্ট,
ভালবাসা আল্লাহর রহমতে হয়
যাহা বুঝা যায়, হৃদয়ে থাকে অদৃষ্ট।
প্রকৃত ভালবাসা অক্ষয়
ভালবাসায় কেউ হয় না অতিষ্ঠ,
ভালবাসার হৃদয়ে থাকেনা ভয়
থাকেনা বিভেদ উৎকৃষ্ট নিকৃষ্ট।
এক যখন হয় দু' জানার দু' হৃদয়
ভালবাসা হয় তখন দু' জন- ই নিবিষ্ট,
একে অন্যের সুখ দুঃখে সমভাগী হয়
সেই ভালবাসা প্রকৃত নির্দিষ্ট।
সবসময়ে-ই হয়,প্রকৃত ভালবাসার জয়
ভালবাসার ভুমিকা অতি বলিষ্ঠ,
ভালবেসে সবাই সুখ চায়,কেউ পায়না, কেউ পায়
কেউ চায়না ভালবাসায় দুঃখ কষ্ট।
ভালবাসার খোঁজে
আশিষ কান্তি সাহা
একটুকু ভালোবাসার খোঁজে, ছুটে গেছি উড়ন্ত বলাকার পিছে,
দিগন্তের দিকে, যেখানে আকাশ মাটিতে মিশেছে।
ওরা একে অপরের মাঝে হয়েছে একাকার,
হতবাক হয়ে যাই মনোরম মিলন দেখে দোহাকার।
ভালোবাসার খোঁজ নিতে, ছুটে গেছি সমুদ্র সৈকতে,
উন্মাদ হয়ে ছুটেছি ,বেলাভূমির এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে।
বিস্ময়ে দেখি, জল স্থলের গভীর প্রেমের মিলন,
অভিভূত হই দেখে আবাল্য প্রেম, মনে জাগে শিহরন।
ভালোবাসার টানে, শৈল শিখরে উঠেছি বারে বারে
উদীপ্ত মনে, ক্লান্তি হীন, বন্ধুরতা কে দুর করে।
বিস্ফোরিত নয়নে দেখেছি, মেঘ আর পাহাড়ের জুটি,
কখন দুরে চলে যায়, কখনো জড়াজড়ি, করে খুনসুটি।
ভালোবাসা পেতে যাই, অরণ্য অভ্যন্তরে ঝর্ণার ধারে,
কন্টকময় সর্পিল পথ বেয়ে, ঝোঁপ ঝাড় পার করে।
তথায় দেখিলাম নয়ন ভরে, কি অপরূপ লীলা!
পাহাড়ী বালক ঝর্ণার প্রেমে পড়ে, করিছে খেলা।
ভালোবাসার টানে, ঘুরে বেড়িয়েছি কত বাগানে,
মালিনীর নজর এড়িয়ে, পাঁচিল পেরিয়ে, অতি সন্তর্পনে।
দেখেছি নয়ন ভরে, ফুল বন্দী প্রজাপতির প্রেমের ডোরে,
চঞ্চল তৃষ্ণার্ত প্রজাপতি, স্নিগ্ধা ফুলের মধু পান করে।
শুধু ভালোবাসা খুঁজতে খুঁজতে বুঝিলাম সার,
চারপাশে রয়েছে ভালোবসার বিশাল ভান্ডার।
ভলোবাসা মিথ্যা খোঁজাখুঁজি করা বাহিরে।
ভালবাসা রয়েছে নিজ অভ্যন্তরে মনের গভীরে।
ভাবনার অতল স্পর্শে তুমি
সোহাগ রেজা
সারাটা সময়-
তোমার চিন্তায় মগ্ন থাকি?
নাহ; ঠিক তেমনটা নয়!
তবে যতটা সময় ভাবি;
ততটা সময় যেন;
অতি আপন;
ভীষণ কাছের; আর-
অত্যন্ত নীবিড়তায় ঘেরা মনে হয়!
কী যে দারুণ!
কী যে অনুভবের!
তা নিজে বুঝা যায়;
কিন্তু; বুঝানো যায় না!
সে আহ্বানে কী আছে জানি না!
মন চায় বারংবার সাড়া দিতে!
শুধু কল্পনায় নয় বাস্তবেও!
ভাবনার অতলস্পর্শে তুমি!
তাই অজানা ইচ্ছেগুলো
হয়ে ওঠে তীব্র!
প্রতিটি মুহূর্তের কিছু মুহূর্ত থাকে বলেই-
জীবন সুন্দর! এতটা...!
ভালোবাসা দিবস
- বেঞ্জিন বেঞ্জয়েট
" বিশ্ব ভালোবাসা দিবস "...
এইদিনটির জন্য ভালোবাসা নাকি
ভালোবাসার জন্য এইদিনটি খুঁজি উত্তর সেই ,
এইদিনটির জন্য ভালোবাসা হলে
বাঁকি দিন গুলিতে কি ভালোবাসার প্রয়োজন নেই ?
অনেকের উত্তর পেয়েছি ঢের ঢেরাধিক
কেউ বলেছে এইদিনটিতে ভালবাসবো বিশেষভাবে ,
যদি তাই হয় অন্যদিনে ঠুনকা ভালবাসলে
বলতে পারেন সেই ভালোবাসা কতটুক টিকে রবে ?
উত্তর যে পাইনি ঠিক তাহা নয়
যাহা হবার হবে , অতো অতো ভাবেন কেন কবি সাব ?
পর্দার আড়ালে থেকে থেকে নারীরা ঘামে চুপসায়
তাই এইদিনটার উছিলায় ছিন্ন করা হয়েছে হিজাব ।
নাউজুবিল্লাহ ...
পৃথিবীর সবাই পিছু লেগেছে ইসলামের
উলঙ্গ করে চিবিয়ে খায় ...
কেউ খায় ছিল্লা ।
যদি ভালোবাসার জন্য এইদিনটি হয়
বাঁকি দিন গুলিতে কেন নয় ?
সারা বছরের ভালোবাসা জমে জমে কি
একদিনেই হয়ে যাবে পরিণয় ?
জবাব মিলেছে তার ... ধুর পাগল কবি
এইদিনটি উপলক্ষ মাত্র আদতে সব দিনই সমান ,
এইদিনটিকে নির্ধারণ করে সবখানে সবাই
দিয়ে যায় হৃদয় নিংড়ায়ে ভালোবাসার মান ।
মানদণ্ডে বিচার করে কি ভালোবাসা হয় ?
হুজুগের পৃথিবী হুজুগি মানুষ গোটা জগৎময় ।
সবার তালে তাল মিলিয়ে সবাইকে দিয়ে গেলাম প্রেম ,
আদতে প্রকৃত ভালোবাসা এখনো হয়নিকো কায়েম ।
জয় হোক ভালোবাসার , ভালোবাসা জিন্দাবাদ ,
রাখেনা যেন স্বার্থের ধরায় ধনী গরীবের তফাৎ ।
ভ্যালেন্টাইন’স ডে
- আবদুল্লাহ্ আল-নিটাব খাঁন
ইবলিশ নেমে এলো,১৪-ই ফেব্রুয়ারি।
পাশ্চাত্যর পায়তারা,প্রেম নামে প্রবঞ্চনা,
ভুঞ্জে নর,ভোগে নারী,শত ধর্ষণ-লাঞ্ছনা।
বিশ্ব ভালবাসা নামে,বিশ্ব বেহায়ার জুড়ি,
যুবক-যুবতীর কোমল মনে,যৌন সুড়-সুড়ি।
তেত্রিশ কোটি শয়তান করে যার হৃদয় বশ,
সেই করে পালন এই বেলাল্লাপনা দিবস।
কুরআন হাদিস ঘষে দেখ,নির্ভুল সু-স্পষ্ট,
সময় নষ্ট,মনে কষ্ট,তারা অভিশপ্ত-পথ ভ্রষ্ট।