নতুন বছর মানেই নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। এটি একটি আত্মপর্যালোচনার সময়, যেখানে আমরা গত বছরের অভিজ্ঞতাগুলোকে ফিরে দেখি এবং সামনের বছরের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করি। প্রিয় পাঠক আজকে আমরা নতুন বছর নিয়ে সেরা কবিতাগুলো পড়বো।
হ্যাপি নিউ ইয়ার
রুমা হামিদ
তারাবাজিই বাজে ছন্দ
বাতাশে বারুদের গন্ধ,
অনল ফুলকি রাঙায় রাত
আহা ! কি আনন্দ ।
বিশ্ববাসী বলছে সকল
হ্যাপি নিউ ইয়ার,
শহর বন্ধু খাচ্ছে বিরানি
সাহেবদের মুখে বীয়ার ।
আসমানে আজো আছে তারা
কেউ তো দেখেনা,
অন্ধকারে ভূতের ভয়, আজ
কেউ তা মানেনা ।
দেখছি নতুন সোনার স্বপ্ন
সোনাফলা মাটিই বসে,
মধ্যরাতে খেলুম ফিরনী
স্বাদের খেজুর রসে ।
এ আমাদের নববর্ষ
বাংলায় বলার অধিকার,
সাহেব সমস্বরে বলি তবু
হ্যাপি নিউ ইয়ার ।
বাতাশে বারুদের গন্ধ,
অনল ফুলকি রাঙায় রাত
আহা ! কি আনন্দ ।
বিশ্ববাসী বলছে সকল
হ্যাপি নিউ ইয়ার,
শহর বন্ধু খাচ্ছে বিরানি
সাহেবদের মুখে বীয়ার ।
আসমানে আজো আছে তারা
কেউ তো দেখেনা,
অন্ধকারে ভূতের ভয়, আজ
কেউ তা মানেনা ।
দেখছি নতুন সোনার স্বপ্ন
সোনাফলা মাটিই বসে,
মধ্যরাতে খেলুম ফিরনী
স্বাদের খেজুর রসে ।
এ আমাদের নববর্ষ
বাংলায় বলার অধিকার,
সাহেব সমস্বরে বলি তবু
হ্যাপি নিউ ইয়ার ।
শুভ নববর্ষ
পুষ্পেন রায়
নতুন বছরের ঘটিল আগমনদীর্ঘ বারোটা মাস পরে
উল্লাসে তাই মেতেছে সবাই
করবে বরণ তারে।
ঘুচাবে তারা অতীত দুঃখ
বিঁধিত আছে যা অন্তরে
নতুনের ছোঁয়ায় মুক্তি মিলিবে
ভুলিবে দুঃখ চিরতরে।
অর্থ কষ্ট করিবে লাঘব
শান্তিতে ভরিবে সংসার
ভিখ মাঙে তাই বিধাতার তরে
পূর্ণ করিবে যা নতুনের বর।
শিশু-কিশোর আর যুবক-যুবতী
সেজেছে সবাই নতুন সাজে
পুরাতন বেশ না করিবে ধারণ
গড়িবে জীবন তারা নতুনের মাঝে।
রাস্তার সেই অনাথ শিশুটিও
কান্না ভুলে তাই হাসে বারেবারে
নতুন বছর বুঝি ঘুচাবে দুঃখ তার
খেতে পাবে দু'বেলা পেটটা ভরে।
পূর্ণ হোক সকলের বাসনা
ধন্য হোক নতুনের আগমন
ভ্রাতৃত্ব বাঁধনে অটুট থেকে
নিষ্কৃতি হোক সকল বিভাজন।
বর্ষ গেল বর্ষ এল
--সুকুমার রায়
বর্ষ গেল বর্ষ এল, গ্রীষ্ম এলেন বাড়ি-পৃথ্বী এলেন চক্র দিয়ে এক বছরের পাড়ি ।
সত্যিকারের এই পৃথিবীর বয়স কেবা জানে,
লক্ষ হাজার বছর ধরে চল্ছে একই টানে ।
আপন তালে আকাশ পথে আপনি চলে বেগে,
গ্রীষ্মকালের তপ্তরোদে বর্ষাকালের মেঘে,
শরৎকালের কান্নাহাসি হাল্কা বাদল হাওয়া,
কুয়াশা-ঘেরা পর্দা ফেলে হিমের আসা যাওয়া-
শীতের শেষে রিক্ত বেশে শূন্য করে ঝুলি্,
তার প্রতিশোধ ফুলে ফলে বসন্তে লয় তুলি ।
না জানি কোন নেশার ঝোঁকে যুগযুগান্ত ধরে,
ছয়টি ঋতুর দ্বারে দ্বারে পাগল হয়ে ঘোরে !
না জানি কোন ঘূর্ণীপাকে দিনের পরে দিন,
এমন ক'রে ঘোরায় তারে নিদ্রাবিরামহীন !
কাঁটায় কাঁটায় নিয়ম রাখে লক্ষযুগের প্রথা,
না জানি তার চাল চলনের হিসাব রাখে কোথা!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর
– কাজী নজরুল ইসলাম
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
আস্ল এবার অনাগত প্রলয়–নেশায় নৃত্য–পাগল,
সিন্ধু–পারের সিংহ–দ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল!
মৃত্যু–গহন অন্ধকুপে, মহাকালের চন্ড–রূপে ধূম্র–ধূপে
বজ্র–শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর!
ওরে ওই হাসছে ভয়ংকর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
দ্বাদশ রবির বহ্নি–জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন–কটায়,
দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার ত্রস্ত জটায়
বিন্দু তাহার নয়ন –জলে
সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে
কপোল–তলে!
বিশ্ব –মায়ের আসন তারই বিপুল বাহুর ‘পর –
হাঁকে ঐ “জয় প্রলয়ংকর!”
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
‘
মাভৈঃ, ওরে মাভৈঃ, মাভৈঃ, মাভৈঃ জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে
জরায়–মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ–লুকানো ঐ বিনাশে
এবার মহা–নিশার শেষে
আসবে ঊষা অরুণ হেসে
করুণ্ বেশে!
দিগম্বরের জটায় লুটায় শিশু–চাঁদের কর!
আলো তার ভরবে এবার ঘর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
নতুন বছরে
-রেদোয়ান মাসুদ
নতুন বছরে হৃদয়ে নামুক বৃষ্টির জোয়ার
পূর্ণ চাঁদের আলোয় হোক ভালোবাসার সওয়ার
মুছে যাক হৃদয়ে জমে থাকা সকল আধার
শিহরণে উঠুক কেঁপে হৃদয় আবার।
আসছে নববর্ষ
-রূপালী গোস্বামী
আকাশটাতে নীল ধরেছে,
ধোঁয়া শীতল হাওয়া,
বৃষ্টিরানী সব দিয়েছে আর কিছু নেই চাওয়া,
নববর্ষের সুর বেজেছে, শিশিরে ভেজা ঘাসে,
আকাশ বাতাস ভরিয়ে দিল নববর্ষের আনন্দে।
নতুন বছর আসছে ঘরে আর নেই বেশি দূর,
চারিদিকে ঝলমলিয়ে সোনালী রোদ্দুর।
বাঁকা নদীর ঢেউয়ের ছন্দে যাদের ছবি ভাসে,
নববর্ষে তাদের গলায় ভাটিয়ালি গান ভাসে আকাশে বাতাসে।
ভেসে যাবে পানসি নিয়ে মেঘের মতো না জানি কোন দেশে।
ফুলেরা সব উঠবে হেসে খুশির তালে,তালে,
আসছে নববর্ষ এক হও সকলে।
নতুন
- শ্রীজাত
লক্ষ বছর পার করেছি আমিতোমার হাতেও আদিমকালের শোক...
অতীত জীবন মুহূর্তে আগামী –
এবার কোথাও নতুন কিছু হোক।
সেই তো একই দিনের পরে দিন
পাথরচাপা বয়স বাড়ার ছল...
সেই তো একই সন্ধে উদাসীন
বাড়ি ফেরার গল্প অবিকল।
দেশ ভেঙেছে। ভাগ হয়েছে মন।
মন ভেঙেছে। ছড়িয়ে গেছে তাস...
একলা বসে পড়ব কতক্ষণ
একই গ্রহের একই ইতিহাস?
কেবল জানি, পাল্টাবে না সব।
নতুন কেবল আক্রমণের পথ –
উঠবে সেজে ক্ষমতা-উৎসব
হামলা নিয়ে তৈরি ভবিষ্যৎ!
এরই মধ্যে তোমায় খুঁজি আমি।
এক ঝলকের সম্ভাবনার নাম
অতীত জীবন মুহূর্তে আগামী –
নইলে কি আর চিনতে পারতাম?
আমরা-আমি-তোমরা-তুমি-ওরা
এক চেহারার নানারকম মুখ
পাল্টে যাবার স্রোত চিরকাল চোরা।
নিজের কাছে সবাই আগন্তুক।
তাও কি শীতের আগুন জ্বালাব না?
হাত বাড়িয়ে নেব না তার আঁচ?
কান পাতলেই বাতাসে যায় শোনা –
‘বাঁচতে হলে বাঁচার মতো বাঁচ’!
আজ তাহলে বাঁচারই গান জ্বালি।
আর একটিবার ঝলসে উঠুক চোখ?
তারিখ, সে তো পাল্টে যাবে কালই
সত্যি এবার নতুন কিছু হোক...
নববর্ষের রোদের রঙ
- রুবিনা মজুমদার
বিশ্বের দরবারে স্ব স্ব জাতি , গোত্র
নিজ নিজ সংস্কৃতির সাথে ইংরেজী সালটাকে
বেশী রাখে স্মরণ -,
তাইতো প্রতি বছর ইংরেজী নববর্ষকে
মানবজাতি অনন্দ - উল্লাসে করে নেয় বরণ !!
বিশ্বের দরবারে সুরমা নিবাসে
ইংরেজী ভাষারই বেশী প্রচলন ,
স্কুল , কলেজ , অফিস , আদালতে
ইংরেজী ভাষারই বিচক্ষণ বিচরণ ।
সব ভাষা ভাষীর চেয়ে দামী যখন ইংরেজী ভাষা
তাই বিশ্ব দরবার ইংরেজী ভাষাকেই দেয় মর্যাদা !!
স্বপ্নহত জোছনার হলুদ রোদে
বিমর্ষ ক্লান্ত জংধরা মুহুর্ত স্মৃতিময় পুরোনো বছর ।
দুয়ার খুলে দাঁড়ায় স্বপ্ন পুড়ে --
নতুন বছরের চেতনার মৌলিক শেকড় !!
মহাকালের কষ্ট ধ্বনির ধুলো রোদে
বেদনার বেনোজলে পুরাতনকে ঝেড়ে মুছে
নতুন প্রেরণায় স্বপ্ন এঁকে নববর্ষের রোদের রঙ্গে
বিমুর্ত উল্লাসে বরণ করে নেয় নতুন একটি বছর ।
নতুন
দীদার মাহদী
নতুন বছর নতুন শ্রেণি
নতুন নতুন বই,
নতুন রুমে নতুন ক্লাশ
পুলকিত হই ৷
নতুন শিক্ষক ছাত্র নতুন
নতুন পরিবেশ,
বলতে গেলে সবই নতুন
নতুন শুরু শেষ ৷
নতুন বোডিং নতুন খাবার
নতুন নতুন মুখ,
কুরআন হাদীস পড়ে পড়ে
যাক কেটে যাক দুখ ৷
সব কিছুকে নিজের মতো
করতে হবে আজ,
পড়ালেখা পড়াশোনা
হোক আমাদের কাজ ৷