নারী নাভি: সৌন্দর্য, সৃষ্টির প্রতীক
তোমার নাভি ছুঁয়ে
অরুণ মাজী
আমি নারী কি নিয়ে ভাবি
- ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম
আমি নারীর কথা ভেবে হারিয়ে যাই চিন্তার দেশে
আমি নারীর সৌন্দর্য নিয়ে ভাবী
আমি নারীর বক্ষের সফেদ গম্বুজ নিয়ে ভাবি
গম্বুজের ভিতরের জলের তরঙ্গ নিয়ে ভাবি?
আমি নারীর চোখ নিয়ে ভাবি
নারীর চোখের তারকায় প্রেম স্বপ্নের খেলা দেখি
যৌবনের জলন্ত অগ্নিপিন্ড দেখি।
আমি নারীর ভ্রু নিয়ে ভাবি
ভ্রুরু'র লোমে প্রেমের তেজস্ক্রিয়তা দেখি
আমি নারীর দীঘল কেশ নিয়ে ভাবি
দক্ষিণা হাওয়ার স্পর্শ দেখে কেশের নৃত্য দেখি
কেশ ছুড়িতে যুবকের বক্ষ ছেদ হতে দেখি।
আমি নারীর নাসিকা নিয়ে ভাবি
নাসিকার মৃদ্যু গরম হাওয়া নিয়ে ভাবি,
সঙ্গমের উচ্ছ্বাসের তীব্রতা দেখি
আমি নারীর দন্ত নিয়ে ভাবি
দন্তের চিকনাইয়ে প্রেমের সজীবতা দেখি।
আমি নারীর নাভি নিয়ে ভাবি
নারীর নাভিতে প্রেমের স্লোগ্লান থেকে ভেসে আসা কার্তুযের ছিদ্রের কথা ভাবি।
আমি নারী নিয়ে ভাবি
আমি নারীর নাভির নিচে দু আঙ্গুল গভীর যোনিপথের কথা ভাবি
আমি নারীর কথা ভাবি
নারীর যোনিপথে সুখ মিশ্রিত কষ্ট দেখি
শত আঘাতে যোনির সজিবতা দেখি।
আমি নারী নিয়ে ভাবি
নারীর কোমল হস্ত নিয়ে ভাবি,
নারীর কোমল হাতের থাপ্পর খাবার আশায়
কবে বিভর হবো সেই আশা করে থাকি।
আমি নারী কে নিয়ে ভাবি
নারীর মাজার বিদ্যুত চমকানি দেখে
মম কামনা কে আহত হতে দেখি।
আমি নারী কে নিয়ে ভাবি
আমি নারীর মন নিয়ে ভাবি
কিন্তু নারীর মনের কোন খুঁজে পাই না
নারীর মনের স্থিরতা দেখি না,
শুধু দেখি নারীর মন ছুটছে
নারীর মন শত যুবার মন লুটছে
আমি নারী নিয়ে ভাবি
কিন্তু নারীর মন কেমনে স্থির থাকবে
খুঁজে পাই না সেই চাবি,
আমি নারী কে নিয়ে ভাবি
নারীর মন নিয়ে ভাবি
কখন জানি নারীর মন
অন্য পুরুষের প্রেম পুকুরে খায় খাবি?
আমি নারী কে নিয়ে ভাবি
আমি নারীর স্বভাব নিয়ে ভাবি,
যার টাকা আছে যশ আছে
তার কাছেই আছে নারীর মন স্থির করার চাবি
আমি নারী কে নিয়ে ভাবি?
দেহ আর ভালোবাসা
স্বপ্নবাজ তরী
তোমার দেহের প্রতিটি ভাঁজ আমি চিনি
না শুধু তাই না। আরো বেশি?
ভাঁজের নিচে লুকিয়ে থাকা লোমকূপ
তার গভীরতাও আমি জানি।
তোমার ঠোঁটে কয়টা ভাঁজ, হয়তো তুমি
নিজেই জানো না। কিন্তু আমি?
প্রতি ভাঁজদ্বয়ের মধ্যকার দুরত্ব কতখানি
তা ভালোই জানে আমার ঠোঁট দুটি।
তোমার নাভিতে জল ধরে কতখানি
তা হয়তো তুমি খেয়াল করোনি। কিন্তু আমি?
নাভীর প্রতিটি ছিদ্রপটের চিত্রখানি
এখনও আঁকতে পারি আমি ।
তোমার উরু কখন সম্মোহিত হয়
তা হয়তো তুমি অনুভব করো কিন্তু আমি?
কিভাবে নিতে হয় স্বর্গসুখের চূড়ায়
তা আর কেউ না জানুক, আমি জানি।
এতসব ভালোবাসার চিহ্ন আঁকতে দিলে
অথচ ভালোবাসা! হ্যাঁ আমি ভেবেই বলছি
যে বিশ্বাসের উপর ভর দিয়ে জীবন চলবে
সেটা কি তুই আমায় দিয়ে ছিলি?
তোমার নাভির গন্ধে
রহমান হেনরী
তোমার নাভির গন্ধে গাছে গাছে ফুটলো বকুল—
না, কোনও বসন্ত-শীত-বর্ষাঋতুর স্বপ্ন নয়,
বিনয়ের চিহ্নায়ন ভুল নয়;
দেহে যদি বাসনা ও সাধ জন্ম নেয়
বকুল তো যে কোনও মুহূর্তে ফুটতে পারে!
কামনা শব্দটি আজ সবুজে সবুজে ঢাকা থাক—
এসো, এই টাটকা গন্ধে কম্বল বানিয়ে,
যৌথজ্বরে শুয়ে থাকি, কম্পমান থাকি—
চূড়ান্ত ঢলের আগে, মধুবাঘ, আজও শুধু সন্ধান সন্ধান—
সন্ধি খুঁজি; এ প্রকারে, সর্বত্রেই, তোমার কস্তুরি করি পান;
শয্যাকম্প ভয়ানক আতঙ্ক ছড়িয়ে দিক, জ্বর ছুটে যাক;
দুজনেরই বীর্য থেকে মাদকতা, ছড়াক সুবাস!
নাভির গল্প
আজ তোমার নাভির গল্প বলো।
ও কিসের মত গভীর?
জল তুলে নেয়া সমূদ্রের মত?
আমি যখন তোমার দেহের
প্রথম ক্ষতচিহ্নে চুম্বন করবো,
লজ্জানন্দে মূর্ছা যাবে না তো?
- নির্মলেন্দু গুণ
নাভি কাব্য
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
এখন আকছার খুব সহজেই মেয়েদের নাভি দেখা যায়
মুখ বা দুটি বুকের আগেই নাভির দিকে চোখ পড়ে
তকতকে পলিমাটির মতন পেট, মাঝখানে অর্ধলুপ্ত চাঁদ যে
মন কালিদাসের আমলের নিম্ননাভি সমস্ত তন্বীর
তারপর বহু যুগ ধরে প্রচণ্ড ঢাকাঢুকি
যত কাব্য শুধু চোখ আর ওষ্ঠাধর নিয়ে
তাও বোরখা পরা মুসলমান মেয়েদের ঠোঁট বা চিবুকের ডৌলও
দেখা যায়নি
কদাচিৎ দুটি তীব্র চোখ
ওদের কবিরা গোটা মধ্যযুগ ধরে কী নিয়ে কাব্য রচেছে?
আমি অনধিকারী, কিন্তু গোপন চিন্তা তো কেউ রোধ করতে পারে না!
এই তো গত এক দশক ধরে সাগরপারে তরুণী মেমরা
ভারতীয় নর্তকীদের কাছ থেকে নাভি খুলে রাখতে শিখেছে
এখন চতুর্দিকে শুধু নাভি, নাচটাচ জানার দরকার নেই
প্রত্যেকটি নাভির মধ্যে রয়েছে একটি মৃণাল
পুরুষ নতজানু হয়ে বসে জাগাতে চায় কুলকুণ্ডলিনী
ফুটে ওঠে একটি সহস্রদল পদ্ম
বস্তুত কোনো নারী যদি খুব কাছে, কাছের থেকেও কাছে,
হিমালয় পাহাড়কে আড়াল করে দাঁড়ায়
তখন সেই পদ্মের সুগন্ধ পুরুষটিকে নিয়ে যায় জন্মের মুহূর্তে
মেয়েরা এসব কিছুই জানে না
না জানাই ভালো!
নারী ও শিল্প
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ঘুমন্ত নারীকে জাগাবার
আগে আমি তাকে দেখি
উদাসীন গ্রীবার ভঙ্গি, শ্লোকের মতন ভুরু
ঠোঁটে স্বপ্ন বিংবা অসমাপ্ত কথা
এ যেন এক নারীর মধ্যে বহু নারী, বিংবা
দর্পণের ঘরে বস
চিবুকের ওপরে এসে পড়েছে চুলের
কালো ফিতে
সরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে না,
কেননা আবহমান কাল
থেকে বেণীবন্ধনের বহু উপমা রয়েছে..
আঁচল ঈষৎ সরে গেছে বুক থেকে-এর নাম
বিস্রস্ত,
এ রকম হয়
পেটের মসৃণ ত্বক, ক্ষীণ চাঁদ নাভি, সায়ার
দড়ির গিট
উরুতে শাড়ীর ভাঁজ, রেখার বিচিত্র
কোলাহল
পদতল-আল্পনার লক্ষ্মীর ছাপের মতো
এই নারী
নারী ও ঘুমন্ত নারী এক নয়
এই নির্বাক চিত্রটি হতে পারে শিল্প,
যদি আমি
ব্যবধান টিক রেখে দৃষ্টিকে সন্ন্যাসী করি
হাতে তুলে খুঁজে আনি মন্ত্রের অক্ষর
তখন নারীকে দেখা নয়, নিজেকে দেখাই
বড় হয়ে ওঠে বলে
নিছক ভদ্রতাবশে নিভিয়ে দিই আলো
তারপর শুরু হয় শিল্পকে ভাঙার এক বিপুল
উৎসব
আমি তার ওষ্ঠ ও উরুতে মুখ গুঁজে
জানাই সেই খবর
কালস্রোত সাঁতরে যা কোথাও যায় না।