জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা ২০২৪।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর জন্ম ইতিহাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশ নিতে সুযোগ দেওয়া হবে। ১ ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিক আবেদন করা যাবে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩১ জানুয়ারি ই-ইউনিট (চারুকলা অনুষদ), ১৪ ফেব্রুয়ারি ডি-ইউনিট (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ), ১৫ ফেব্রুয়ারি বি-ইউনিট (কলা ও আইন অনুষদ), ২২ ফেব্রুয়ারি এ-ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ২৮ ফেব্রুয়ারি সি-ইউনিটের (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২১ ও ২০২২ সালে এসএসসি/সমমান এবং ২০২৪ সালে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদনের সুযোগ পাবেন। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ইউনিটে ভর্তির জন্য নির্ধারিত শর্ত পূরণ করবে, কেবল তারাই ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আগামী ১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ১৫ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের (https://admission.jnu.ac.bd) মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীদের প্রাথমিক আবেদন ফি হিসাবে ১০০ টাকা দিতে হবে। আবেদনকারীদের মধ্য হতে মেধাক্রম অনুসারে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত ৪০ হাজার আবেদনকারীকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হবে। যেসব আবেদনকারী প্রাথমিক বাছাইয়ে নির্বাচিত হবেন, তাঁদের ৭০০ টাকা দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর জন্ম ইতিহাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ১৮৫৮ সালের ব্রাহ্ম স্কুল থেকে শুরু হয়েছে। ১৮৭২ সালে বালিয়াটির জমিদার কিশোরী লাল রায় প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করেন তার পিতা জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামে। ১৮৮৪ সালে এটি দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজ এবং ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণীর কলেজে পরিণত হয়, যা ঢাকার উচ্চ শিক্ষার অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান ছিল।


১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং এটি ইন্টারমিডিয়েট কলেজে পরিণত হয়। সে সময় জগন্নাথ কলেজের শিক্ষকদের, শিক্ষার্থীদের এবং গ্রন্থাগারের বই পোস্ট ঢাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার সাজাতে জগন্নাথ কলেজ গ্রন্থাগারের ৫০ ভাগ বই প্রদান করা হয়।


১৯৪২ সালে পুরনো ঢাকার নারী শিক্ষার বাধা দূর করতে জগন্নাথ কলেজে সহশিক্ষা চালু হয়, যা ১৯৪৮ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ১৯৪৯ সালে আবার স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৩ সালে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পুনরায় সহশিক্ষা চালু করেন। ১৯৬৮ সালে institution টি সরকারিকরণ করা হলেও পরবর্তী বছরে আবার এটি বেসরকারি মর্যাদায় ফিরে আসে। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাস হওয়ার মাধ্যমে এটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।


বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে নতুন হলেও এর ইতিহাস দেড়শ বছরেরও অধিক পুরানো। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, এবং মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথের অবদান অপরিসীম। পাকিস্তান আমলে সরকারবিরোধী আন্দোলন করার কারণে তৎকালীন সরকার প্রতিষ্ঠানটিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়।


১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে জগন্নাথের ছাত্র ও শিক্ষকরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সংশোধনী প্রস্তাব বাতিল হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদের মিছিল সারা শহরে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

----------

Post a Comment