গণতন্ত্র ও বাংলাদেশ
(সংকেত: ভূমিকা; গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য; বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাস; গণতন্ত্রের সুফল; গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ; গণতন্ত্র ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত; বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চায় সমস্যা; গণতন্ত্র বিকাশে করণীয়।
ভূমিকা: রাষ্ট্র পরিচালনার আধুনিক এবং সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা হলো গণতন্ত্র। গণতন্ত্র এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে জনগণ শাসক গোষ্ঠীকে নির্বাচন করে। গণতন্ত্র জনগণের দ্বারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত প্রক্রিয়াও বটে। গণতন্ত্র বলতে জনগণের শাসনকেই বোঝায়। স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশও সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে গণতন্ত্রকে বেছে নেয়। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এখনও বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে হাটছে।
গণতন্ত্রের ইতিহাস: প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ একত্রে বসবাস করতো। এ সময় মানুষ বিশৃঙ্খলতা এড়ানোর জন্য একজন দলনেতা নির্বাচন করে পুরো সমাজ বা গোষ্ঠীকে পরিচালনা করতো। এভাবে সে সময় থেকেই মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিজেদের প্রয়োজনেই শাসন ব্যবস্থা সৃষ্টি করে। বর্তমানে আমাদের রাষ্ট্রনায়ক নির্বাচন ও তার হাতে শাসনভার তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়াটিও সেভাবেই চলে এসেছে। তবে আধুনিক গণতন্ত্রের সূতিকাগার হলো গ্রিস।
গণতন্ত্র: গণতন্ত্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Democracy. এ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ Demos এবং Kratia হতে। সহজভাবে বলতে গেলে, যে শাসন ব্যবস্থায় প্রত্যেক ব্যক্তিরই অংশ রয়েছে, তাই গণতন্ত্র। এছাড়াও বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গণতন্ত্রের বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন। তবে সকলের বক্তব্যের মূলকথা হলো- জনগণই সকল শাসন ব্যবস্থার মালিক, এতে তাদের প্রত্যেকেরই অংশ রয়েছে। সবচেয়ে সুন্দর ও সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞা দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। তিনি বলেছন- “গণতন্ত্র হচ্ছে জনগণের সরকার, জনগণের জন্য সরকার এবং জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার (Goverment of the peopl, for the people, by the people)”।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য: বর্তমানে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ও সুবিধাজনক রাজনৈতিক শাসন ব্যবস্থা হলো গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কিছু বৈশিষ্ট্য হলো বাক-স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, নিয়মতান্ত্রিক শক্তিশালী বিরোধী দল, পরমত ও পরের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, সহনশীলতা, সুষ্ঠু নির্বাচন পদ্ধতি, ব্যক্তি অধিকার ও কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাস: গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশের মানুষের আন্দোলন দীর্ঘদিনের। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের হাত ধরেই গণতন্ত্রের চর্চা শুরু হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১০ জানুয়ারি চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটে। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে বহু দলীয় গণতন্ত্র আসলেও ১৯৮২ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলনের পর ১৯৯১ সালে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে ৫ম জাতীয় সংসদে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হয়।
গণতন্ত্রের সুফল: যেহেতু গণতন্ত্র জনগণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তাই, গণতান্ত্রিক দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান ক্ষমতা ও সমান অধিকার থাকে। দেশের নির্বাচিত শাসক জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে থাকে বলে, জনগণের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান তার কাছে মৌলিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সেখানে ব্যক্তির চিন্তা ও মানসিক বিকাশের পথ খোলা থাকে। গণতন্ত্রে দেশের জনগণের মানোন্নয়ন, দেশের সমৃদ্ধি আনয়ন, নীতি নির্ধারণ ইত্যাদি জনগণের চাহিদা অনুযায়ী করা হয় বলে এটি সারা বিশ্বে জনপ্রিয় শাসনব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণের মতামতের প্রাধান্য থাকে বলে, গণতন্ত্রের সুফল আকাশ ছোঁয়া।
গণতন্ত্র ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত: ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তাতে অনেক দুর্বলতা ছিল। তন্মোধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় নিয়মতান্ত্রিক বিরোধী দলের অভাব, পারস্পরিক সহনশীলতার অভাব, সংকীর্ণতা ও অহমিকা, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি। বর্তমান বাংলাদেশেও গণতন্ত্রের দুর্বলতা প্রতীয়মান। ১৯৯০ এর দশকে সামরিক অভ্যুত্থানের পর আমরা সে গণতন্ত্র পেয়েছি তাতেও আমাদের অর্জন খুবই কম। আমাদের বর্তমান গণতন্ত্রের বয়স প্রায় ২৪ বছর। এ ২৪ বছরে গণতন্ত্র চর্চার ইতিহাস চরম বেদনাদায়ক। বড় বড় দুর্নীতি, কোটি কোটি মানুষের হাহাকার, চরম নৈরাজ্য, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, রাজনৈতিক অস্থিরতায় গণতন্ত্র আজ ভূলুণ্ঠিত। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পেরিয়ে আজও এ দেশে লোমহর্ষক সন্ত্রাস, অপরাধীদের তা-ব, শিশু হত্যা, মৌলবাদের পাশবিক তা-ব, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চায় সমস্যা: বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চার সমস্যা দু’রকমের। যথা- আচরণগত বা সাংস্কৃতিক সমস্যা, আদর্শিক বা সাংবিধানিক সমস্যা।
আচরণগত বা সাংস্কৃতিক সমস্যা: বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চার আচরণগত দিক বিশ্লেষণ করলে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পাওয়া যায়।
১। রাজনৈতিক আচরণ ২। রাজনৈতিক অনুশীলন ৩। রাজনৈতিক প্রথা বা পদ্ধতি।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংরাদেশের জন্য উপরোক্ত বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলাদেশে এ বিষয়গুলো খুবই শোচনীয় পর্যায়ে। সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র হচ্ছে অর্জন ও অনুশীলনের বিষয়। গণতন্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন দলের ধারণা পরস্পরবিরোধী। ফলশ্রুতিতে রাজনীতির দিক দিয়ে আমরা প্রতিনিয়তই সম্মুখীন হচ্ছে পরস্পর বিরোধীতা। বিভিন্ন রাজনৈতিক কলাকৌশলের মারপ্যাঁচে আমাদের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র সত্যিই আজ বিপন্ন। তারই জলন্ত উদাহরণ হলো পঞ্চম সংসদের দীর্ঘকালীন অচলাবস্থা। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন প্রহসনমূলক নির্বাচন সপ্তম সংসদে বিরোধী দলের একটানা সংসদ বর্জন, অষ্টম সংসদে গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রশ্নে অনৈক্য, নবম সংসদে সরকার ও বিরোধী দলের টালবাহানা প্রভৃতি গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে আচরণগত সমস্যার সৃষ্টি করছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য সমস্যা হলো-
-গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে সহিষ্ণুতা ও সমঝোতা। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে সহিষ্ণুতা ও সমঝোতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
-বাংলাদেশে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক নেতৃত্ব ও নির্বাচন পদ্ধতি নেই। দলের প্রধানের হাতেই থাকে নেতা-নেত্রী নির্বাচনের সমস্ত দায়িত্ব এবং সবকিছু নির্ভর করে দল প্রধানের ইচ্ছার উপর। ফলে গণতন্ত্রের চর্চা সম্ভবপর হয় না।
-দলের ভেতর উপদল সৃষ্টি হলে তাতে বিভিন্ন কোন্দল সৃষ্টি হয়, যা গণতন্ত্র চর্চায় ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।
-রাজনৈতিক সহিংসতা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সন্ত্রাসমূলক কর্মকান্ড এদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে স্বাভাবিক ঘটনা।
-বিরোধী দল গণতন্ত্রের অন্যতম উপাদান। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাগণ মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিরোধী দলকে সহ্য করতে পারে না।
আদর্শিক বা সাংবিধানিক সমস্যা: প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত কোনো সংগঠিত রাজনৈতিক দলই প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠেনি। তাদের নিজেদের গঠনতন্ত্রেই অনেক সমস্যা লক্ষণীয়। দলীয় প্রধানের হাতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা থাকে। তাতে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঝুঁকি থাকে। আবার আমাদের মূল বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ক্ষেত্রবিশেষে তা গণতন্ত্রের সাথে সামঞ্জস্যহীন।
গণতন্ত্র বিকাশে করণীয়: বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চায় যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর সমাধানের মাধ্যমে সুস্থ গণতন্ত্রের চর্চা প্রয়োজন। সেজন্য কিছু পদক্ষেপ জরুরি। যেমন-
-সুস্থ ধারার পরিচ্ছন্ন গণতান্ত্রিক চর্চার পথ বিকশিত করা।
-সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে পরস্পর বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটানো।
-বিচার বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া।
-সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবার সুযোগ দেয়া।
-অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
-দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বন্ধ করা।
-জনসাধারণের নিকট জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা।
-নির্বাচন কমিশনকে বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করা।
-তথ্য অধিকার আইনের সংস্কার এবং প্রয়োগ করা।
উপসংহার: বাংলাদেশের গণতন্ত্র চর্চায় যেমন সমস্যা রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। রাজনীতিতে বহুসংখ্যক শিক্ষিত নেতা প্রয়োজন, প্রয়োজন সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সমঝোতা। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী মধ্যে রয়েছে অসীম একাগ্রতা, যার প্রমাণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশের গণতন্ত্র যদি দুর্বল কাঠামোসম্পন্ন হয় তবে তা বাঙালি জাতির জন্য চরম লজ্জাকর। গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারলে এদেশে আসবে কাক্সিক্ষত শান্তি ও স্থিতিশীলতা। জনগণ পাবে পূর্ণ স্বাধীনতা ও মুক্ত গণতন্ত্রের স্বাদ।
গণতন্ত্রের পুনর্যাত্রা
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতের পর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা থমকে যায়। এরপর দীর্ঘ ১৫ বছর সামরিক শাসন ও একনায়কতন্ত্রে দেশ পরিচালিত হয়।
সামরিক শাসনের অবসান ও গণতন্ত্রের পুনরুত্থান
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সামরিক শাসনের অবসান ঘটে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের নতুন যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের গণতান্ত্রিক ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠা পায়।
গণআন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান
১৯৮০-এর দশকে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণ বিভিন্ন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ১৯৮৩ সালে ১৫ দল ও ৭ দলীয় জোট সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর নূর হোসেনের শাহাদাত এবং ১৯৮৮ সালের চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার সমাবেশে গুলিবর্ষণের ঘটনা জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
১৯৯০ সালে বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জেনারেল এরশাদ পদত্যাগ করেন। এরপর বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে মাইলফলক হয়ে ওঠে।
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা
১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে এবং সংসদীয় পদ্ধতি পুনর্বহাল হয়। এর পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু থাকে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়, যা সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন
বাংলাদেশ দারিদ্র্য হ্রাস, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষার প্রসার, নারী ক্ষমতায়ন, এবং স্বাস্থ্যসেবায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে, এবং শিশু মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
নারীর ক্ষমতায়নে মাতৃত্বকালীন ভাতা, নারী শিক্ষায় উপবৃত্তি, এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি কার্যকর করা হয়েছে।
শিশু সুরক্ষা ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতেও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা লাভ করেছে এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
উপসংহার
১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক শাসনের অবসান ঘটে এবং বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যায়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশ আজ একটি গণতান্ত্রিক ও মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে।