থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস।থার্টি ফাস্ট নাইট পালন করা কেন হারাম।থার্টি ফার্স্ট নাইট ইসলাম কি বলে।থার্টি ফার্স্ট নাইট কি

আলোচ্য বিষয়ঃ Happy New year বা থার্টি ফাস্ট নাইট পালন করা কেন হারাম??


আমরা ছয়টি পয়েন্টে আলোচনা করব । 

১) থার্টি ফার্স্ট নাইট অর্থ কি?

২) থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস ।
৩) খ্রিস্টীয় সনের ইতিহাস । 
৪) থার্টি ফার্স্ট নাইট কিভাবে আমাদের দেশে প্রচলিত হলো।
৫) থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করা কেন হারাম। 
৬) থার্টিফার্স্ট নাইটে আমাদের করণীয় বর্জনীয় । 

.............................এক......................................
থার্টি ফার্স্ট নাইট অর্থ কি/ বলতে কি বুঝায়
থার্টি ফার্স্ট নাইট ইংরেজি শব্দ। থার্টি অর্থ ত্রিশ। ফার্স্ট অর্থ প্রথম এবং নাইট অর্থ রাত ।  অর্থাৎ থার্টি ফাস্ট নাইট অর্থঃ একত্রিশ এর রাত। ইংরেজি নতুন বর্ষকে বরণ করার লক্ষে এই দিবস পালন করা হয়। বিভিন্ন দেশে এই দিনটিতে পাবলিক হলিডে পালন করা হয়। বিভিন্ন ধরনের উৎসবের পালনের মাধ্যমে মুখরিত করা হয় এই দিনটি।
থার্টি ফার্স্ট নাইট হল খ্রিস্টীয় বা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার হিসেবে 31 ডিসেম্বর দিবাগত রাত।  পহেলা জানুয়ারির প্রথম প্রহর। 31 ডিসেম্বর এই দিনে রাত 12 টার পর থেকে সারাবিশ্বে শুরু হয়ে যায় উৎসবমুখর পরিবেশ। নতুন বছরকে বরণ করতে পালন করা হয় নানা ধরনের অনুষ্ঠান, আতশবাজি, নাচ ও নিত্য ইত্যাদি। 
.
.
................................দুই..................................

___থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস__

পৃথিবীর ইতিহাসে হাজার হাজার বছর পূর্বে থেকে নববর্ষ কে উপলক্ষ করে উৎসব করা মূলত ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই হয়ে আসছে । হাজার হাজার বছর পূর্বে এমনকি খৃষ্টবাদ এর বহুবছর পূর্বেই পেগার তথা প্রকৃতি পূজারীরা বছরের শুরু দিনকে উৎসবের দিন হিসেবে নানান অশ্লীলতা এবং খারাপ কার্যক্রম এর মাধ্যমে উদযাপন করত । 
উল্লেখ্য পেগান বা প্যাগানিজম একটি ধর্মীয় মতবাদের নাম,  যারা মূলত পৃথিবী, আগুন, বাতাস, পানিকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মনে করে সেগুলোর পূজা করত । এক কথায় যাদেরকে বলা হয় প্রকৃতিপূজারী । 
মূলত এই পেগান এবং অগ্নি পূজারীরা বছরের প্রথম দিনকে উৎসব হিসাবে পালন করতো । তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিল জুলিয়াস সিজার, যে ব্যক্তি "সিজার" নামক দেবতার উপাসনা করত এবং তার নামেই নিজের নাম রেখেছে জুলিয়াস সিজার । এবং সেই সর্বপ্রথম গ্রোগারিয়ান ক্যালেন্ডার চালু করে এবং সেই ক্যালেন্ডারের প্রথম দিবসকে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের দিবস হিসেবে পালন শুরু করে । 1752 সালে ইংরেজরা ১লা জানুয়ারিকে ইংরেজি নববর্ষ হিসেবে পালন করে। থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস থেকে বোঝা যায় এটি গ্রেগরিয়ান নববর্ষ।
অতঃপর খৃষ্টবাদ এর অষ্টম শতাব্দীতে ইরানে জামশেদ নামক বাদশা জুলিয়েট সিজারের পথ ধরে বছরের শুরু দিনে উৎসব চালু করে যার নাম দেওয়া হয় "নৌরোজ" 
ফার্সি ভাষায় নৌ অর্থঃ নতুন 
আর রোজ অর্থঃ দিন অর্থাৎ বছরের নতুন দিন ।
এই পেগান এবং মুশরিক জামশেদ যেহেতু প্রকৃতির পূজা করত, অগ্নি পূজা করত, সূর্য আগুন বাতাস পানির পূজা করত । সে হিসেবে তারা সময়েরও পূজা করত । এজন্য বছরের প্রথম দিনটাকে পূজনীয় দিন হিসেবে তারা নানান উৎসব ও আয়োজনের মাধ্যমে এটাকে বরণ করে নিত । যাতে করে সময়ের এই পূজার মাধ্যমে তারা সারা বছর ভালো কাটাতে পারে । 
:
:
:
...................………………তিন…………………………………

___খ্রিস্টীয় সনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস____

খ্রিস্টীয় সন কে ইংরেজি সনও বলে একটা সর্বজনীন রূপ দিলেও এটি মূলত খ্রিস্টাব্দ বা খ্রিস্টীয় সন । আর আমাদের জানা উচিত যে খ্রিস্টীয় সন মূলত খ্রিস্টানদের নবী যীশুখ্রীষ্ট ( আমরা যাকে নবী ঈসা আঃ বলে থাকি) তার জন্ম তারিখ কে স্মরণীয় করে রাখতে তার জন্মদিন কে কেন্দ্র করে বানানো হয়েছে এই খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার যাকে আমরা ইংরেজি ক্যালেন্ডার ও বলে থাকি । 
আর সেই ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন কে খ্রিস্টানরা নিজেদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ মনে করে "থার্টি ফার্স্ট নাইট" নামে উৎসব হিসাবে উদযাপন করে থাকে ।
এটা যে নিরেট খ্রিস্টানদের সংস্কৃতি তা উইকিপিডিয়া থেকে সুস্পষ্ট ভাবে আমরা জানতে পারি । উইকিপিডিয়ায়_ রোমান খ্রিস্টানদের জানুস দেবতার ইতিহাস লেখা আছে । 
দুই মাথা ওয়ালা জানুস ছিল রোমান খ্রিস্টানদের নিকট ভাগ্যদেবতা । রোমানরা মনে করত জানোস দেবতাই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকে । এই কারণে রোমানরা জানুস কে পূজা করত । জানুয়ারি মাসের নামকরণ করা হয় জানুস দেবতার নাম অনুসারেই। যেহেতু রোমানরা জানুস কে ভাগ্যদেবতা মনে করত,  তাই তারা ৩১ শে ডিসেম্বর রাতে জানুসের পিছনের মাথার সামনে গিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং পূজা করত আর তারা মনে করত সারা বছর পেরিয়ে ওই রাতটি পেয়েছে জাহানুসের পিছনের মাথার বদলতে । 
এরপর তারা আমদ ফুর্তিতে মেতে উঠতো, কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল গত বছর যত ভালো ও কল্যাণ তারা লাভ করেছে, তার সবই পেয়েছে জানুস দেবতার মাধ্যমে । 
অতঃপর যখনই রাত বারোটা বাজতো,  রোমানরা জানুস এর সামনে মাথার দিকে চলে যেত কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল আগামী বছর যদি ভালো কিছু পেতে হয়, তাহলে জানুসের সামনের মাথাকে খুশি করতে হবে । এজন্য রোমানরা আবার প্রার্থনা করত, ৩১শে ডিসেম্বর রাতের সেই উৎসব উদযাপন পূজা প্রার্থনা সবই ছিল জানুস দেবতা কেন্দ্রিক ।  সময়ের বিবর্তনে আজ যা হয়ে উঠেছে বিশ্বব্যাপী "থার্টি ফার্স্ট নাইট"
:
:
:
…………………………………চার………………………………

__বর্তমান অভিশপ্ত "থার্টিফার্স্ট নাইট" যেভাবে দেশে প্রবেশ করে । __

১৯২ বৎসর প্রায় ২০০ বছর আমাদের কে গোলামির শিকলে আবদ্ধ করে রেখেছিল জালিম খ্রীষ্টান ইংরেজরা । পুরো হিন্দুস্তান দখল করে নিয়েছিল । হাজার হাজার আলেম-ওলামাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল । লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে । 
এই কুখ্যাত ইংরেজরা স্পেনের কানাডায় লাখ লাখ মুসলমান নারী পুরুষকে মসজিদ এবং জাহাজের ভিতরে অবরুদ্ধ করে পুড়িয়ে মেরেছিল । মধ্য আফ্রিকা থেকে মুসলমানদেরকে বিতাড়িত করেছিল । এছাড়া সারা পৃথিবীতে মুসলমানদের ধ্বংসের নীল নকশার মূল হোতা ছিল এই ইহুদী-খ্রিস্টানেরা ‌।
ভারতবর্ষের দখলদার এই সমস্ত কুখ্যাত ব্রিটেনের ইংরেজরা যেহেতু খ্রিস্টান ছিল তাই তারা তাদের দৃষ্টি কালচার এবং নাপাক খ্রিস্টীয় মতবাদ মুসলিম সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়ে দেয় । আর খ্রিষ্টানদের কৃষ্টি কালচার এবং খ্রিস্টীয় মতবাদের অন্যতম একটি হলো #থার্টি ফাষ্ট নাইট"উদযাপন করা । তারা তাদের শাসনামলে এই দেশে মুসলিম সমাজের খুব চতুরতার সাথে যুবকদের কে আমের ফুর্তিতে মাতিয়ে থার্টিফার্স্ট নাইট এর মত একটি অমুসলামিক এবং বিজাতীয় সংস্কৃতির সাথে এদেশের মুসলমান যুবকদেরকে যুক্ত করে দেয় ‌ 
"থার্টি ফাস্ট নাইট" এর মূল উদ্দেশ্য হল স্রষ্টা কোন কিছুই করতে পারে না । ভাগ্য পরিবর্তন করা ভাগ্য নির্ধারণ করা একমাত্র জানুস দেবতার কাজ । তাই বছরের শুরু দিনে যদি আনন্দ উল্লাস বিভিন্ন উৎসবের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় তাহলে আগামী এক বছর আনন্দ ও শান্তিতে কাটানো যাবে । অথচ মুসলিমদের বিশ্বাস হলোঃ ভাগ্য নির্ধারক একমাত্র স্রষ্টা আল্লাহ তা'আলা । আর ভালো মন্দ তাকদিরে উপর লিপিবদ্ধ । আল্লাহ যার কল্যাণ চাইবেন তাকে কল্যাণ দান করবেন । কোন দিবস দিন কিংবা সময়ের সাথে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ হয় না । 
➡️ মুমিনদের অভিভাবক আল্লাহ আর কাফেরদের অভিভাবক শয়তান । 
সুরা বাকারা _১৫৭
اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا أَوْلِيَاؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُم مِّنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ ۗ أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
 আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক। তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে নিয়ে আসেন। আর যারা কুফর অবলম্বন করেছে তাদের অভিভাবক শয়তান, যারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারে নিয়ে যায়। তারা সকলে অগ্নিবাসী। তারা সর্বদা তাতেই থাকবে।
:
:
…………………………………পাঁচ……………………………

____কেন আমরা থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করি না? কেন তা হারাম ______

.
.
১) এটা বিধর্মীদের কালচার । আর তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করলে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত মনে করা হবে ।
সুরা মায়িদা _৫১
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
হে মুমিনগণ! ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা নিজেরাই একে অন্যের বন্ধু! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাদেরকে বন্ধু বানাবে, সে তাদেরই মধ্যে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমদেরকে হিদায়াত দান করেন না।
.
.
.
➡️ কোন বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্যতা রাখা বৈধ নয় ।
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৯৮৯ (আন্তর্জাতিক নং ৪০৩১)
 عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ " .
ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন কওমের (সম্প্রদায়ের) অনুসরণ-অনুকরন করবে, সে তাদের দলভুক্ত হবে ।
.
.
.
➡️ বিধর্মীদের বিরোধিতা করা ।
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৫২
 عَنْ يَعْلَى بْنِ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " خَالِفُوا الْيَهُودَ فَإِنَّهُمْ لاَ يُصَلُّونَ فِي نِعَالِهِمْ وَلاَ خِفَافِهِمْ " .
ইয়ালা ইবনে শাদ্দাদ ইবনে আওস থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ তোমরা ইহুদীদের বিরুদ্ধাচরণ কর। তারা জুতা ও মোজা পরিধান করে নামায আদায় করে না।
.
.
.
➡️ বিধর্মীদের উৎস পালন করলে আল্লাহ তাআলার গজব নাযিল হয় ‌।
আল-মাওদুআতুল হাদিসিয়্যাহ ১৫/১৮
عن انس بن مالك، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم "لا تقربوا اليهود والنصارى في أعيادهم ، فإن السخطة تنزل عليهم"
আনাস ইবনে মালেক (রাদিঃ) এর সূত্রে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ তোমরা খ্রিষ্টান ইহুদীদের উৎসবের ধারে কাছেও যেওনা । কেননা তাদের উতসব স্থলে আল্লাহ তায়ালার গজব নাযিল হয় । 
.
.
.
➡️ বিধর্মীদের উৎস পালন করলে আল্লাহ তাআলার গজব নাযিল হয় ‌।
قال عمر رضي الله عنه : " لا تعلموا رطانة الأعاجم ، ولا تدخلوا على المشركين في كنائسهم يوم عيدهم ، فإن السخطة تنزل عليهم
উমর রাদিঃ বলেনঃ তোমরা আনারবদের বাজে কথা থেকে সাবধান থাকো । এবং মুশরিকদের উৎসবের দিনে তাদের গির্জায় প্রবেশ করবে না কারণ তাদের উপর আল্লাহর গজব নেমে আসে । 
.
.
.
২) নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা হয় । এবং অশ্লীল পোশাক পরিধান করা হয় । 
 সহিহ মুসলিম _৫৩৯৭
 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلاَتٌ مَائِلاَتٌ رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ لاَ يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلاَ يَجِدْنَ رِيحَهَا وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا " .
 আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ জাহান্নামবাসী দু’ধরনের লোক এমন আছে যাদের আমি (এখনো) দেখতে পাইনি। একদল লোক, যাদের সাথে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে, তা দিয়ে তারা লোকজনকে পিটাবে। আর এক দল স্ত্রীলোক, যারা বস্ত্র পরিহিত হয়েও বিবস্ত্রা, (সুখ সম্পদ ভোগকারিনী হয়েও অকৃতজ্ঞা) যারা অন্যদের আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা, তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কূঁজের ন্যায়। ওরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, এমনকি তার খুশবুও পাবে না। অথচ এত এত দূর থেকে তার খুশবু পাওয়া যায়।
.
.
.
৩) গান বাজনা হয় । 
সুরা লোকমান_৬-৭
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ 
কতক মানুষ এমন, যারা অজ্ঞতাবশত আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিচ্যুত করার জন্য খরিদ করে এমন সব কথা,
 ১)  যা  আল্লাহ  সম্পর্কে  উদাসীন করে দেয় 
২) এবং তারা আল্লাহর পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। তাদের জন্য আছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি।
وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِ آيَاتُنَا وَلَّىٰ مُسْتَكْبِرًا كَأَن لَّمْ يَسْمَعْهَا كَأَنَّ فِي أُذُنَيْهِ وَقْرًا ۖ فَبَشِّرْهُ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ
এরূপ ব্যক্তির সামনে যখন আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন সে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে তা শুনতেই পায়নি, যেন তার কান দু’টিতে বধিরতা আছে। সুতরাং তাকে এক যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।
.
.
➡️ বাদ্যযন্ত্রকে হারাম করা হয়েছে । 
—মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং ৪৫০৩
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى حَرَّمَ الْخَمْرَ وَالْمَيْسِرَ وَالْكُوبَةَ وَقَالَ: كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ . قِيلَ: الْكُوبَةُ الطَّبْلُ. رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شعب الْإِيمَان
৪৫০৩। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ্ তা'আলা মদ্যপান করা, জুয়া খেলা এবং ঢোল বাজানো হারাম করিয়াছেন এবং বলিয়াছেন, প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী বস্তু হারাম। কেহ কেহ বলিয়াছেন, কূবা অর্থ তবলা। —বায়হাকী শোআবুল ঈমানে
.
.
.
৪) কোটি কোটি টাকা ও সম্পদ অপচয় হয়। 
সুরা আরাফ _৩১
بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ
 হে আদমের বংশধরগণ! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান কর। পানাহার কর, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না।
সুরা বনি ইসরাইল _২৭
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ ۖ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا
নিশ্চয় যারা অপব্যয় করে, তারা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার প্রতিপালকের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। 
.
.
.
৫) শিশু বৃদ্ধ ও সাধারণ মানুষ কে কষ্ট দেওয়া হয়। অথচ তা হারাম। 
সুরা আহযাব _৫৮
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُّبِينًا
যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে।
.
.
.
…………………………………ছয়………………………

___থার্টিফার্স্ট নাইট দিবসে একজন মুমিনের দায়িত্ব কি?__

:
:
১) ঈমানের সাথে কুফরিকে সংশ্রমিশ্রণ করবে না ।
—আল আনআম - ৮২
الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُم بِظُلْمٍ أُولَٰئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُم مُّهْتَدُونَ
(প্রকৃতপক্ষে) যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেদের ঈমানকে জুলুমের সাথে মিশ্রিত করেনি, নিরাপত্তা ও স্বস্তি তো কেবল তাদেরই অধিকার এবং তারাই সঠিক পথে পৌঁছে গেছে।
.
.
.
২) অন্যায় মূলক কাজ থেকে এড়িয়ে চলবে । 
সুরা ফুরকান_৭২
وَالَّذِينَ لَا يَشْهَدُونَ الزُّورَ وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا
এবং (রহমানের বান্দা তারা) যারা অন্যায় কাজে শামিল হয় না  এবং যখন কোন বেহুদা কার্যকলাপের নিকট দিয়ে যায়, তখন আত্মসম্মান বাঁচিয়ে যায়।
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন ইমাম মুজাহিদ, ইমাম তাউফ, ইমাম ইবনে সিরীন, ইমাম যাহহাক, ইমাম রবি ইবনে আনাস রহঃ প্রমুখ বলেন অন্যায় কাজে অংশগ্রহণ না করার অর্থ হলো বিধর্মীদের উৎসবে উপস্থিত হয় না । ঘটনা ক্রমে বিধর্মীদের উৎসবের মুখোমুখি হয়ে পড়লেও তা এড়িয়ে চলে । 
.
.
.
৩) ভবিষ্যতে ভালো কাজ করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা ।
—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৪৫৯
عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ وَالْعَاجِزُ مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ " 
শাদ্দাদ ইবনে আওস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ বুদ্ধিমান হল সেই ব্যক্তি যে ব্যক্তি স্বীয় নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মৃত্যুর পরের জন্য আমল করে। অক্ষম হল সে ব্যক্তি যে ব্যক্তি স্বীয় নফসের চাহিদার অনুসরণ করে চলে আর সে আল্লাহর কাছে অলীক আশা পোষণ করে।
.
.
.
৪) নিজের আমলনামার হিসাব নিকাশ করা। 
وَيُرْوَى عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ حَاسِبُوا أَنْفُسَكُمْ قَبْلَ أَنْ تُحَاسَبُوا وَتَزَيَّنُوا لِلْعَرْضِ الأَكْبَرِ وَإِنَّمَا يَخِفُّ الْحِسَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى مَنْ حَاسَبَ نَفْسَهُ فِي الدُّنْيَا
উমাম ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ তোমরা নিজেদের হিসাব নাও, হিসাবের সম্মুখীন হওয়ার পূর্বে। (কিয়ামত দিবসের) মহা উপস্থাপনের জন্য নিজেদের সাজিয়ে নাও। যে ব্যাক্তি দুনিয়াতেই নিজের হিসাব নিবে কিয়ামতের দিন সেই ব্যাক্তির হিসাব হালকা হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ঈমান ধ্বংসকারী নব্য ফেতনা থেকে হেফাজত করুক । বিধর্মীদের সংস্কৃতি কালচার ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুক

Post a Comment