করোনা
ডাঃ মোঃ আনসার উদ্দিন ভূঞা
বাংলাদেশে করোনা ধীর গতিতে আসছে। বাংলাদেশ করোনা মোকাবেলা করার সময় পেয়েছে। মানুষকে সচেতন করে তোলার সময় পেয়েছে। কিন্তূ তার পরও বাংলাদেশের মানুষ সচেতন হয়ে উঠতে পারছেনা।এটা বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য দূর্ভাগ্য।
বাংলাদেশে যে ভাবে করোনা এসেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ভিতর বাংলাদেশ ঔষধ উৎপাদিত কম্পানি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বাংলাদেশের জন্য দারুন সফলতা নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের জন্য এটা বড় সফলতা।এটা আমি কেন আমার সাথে অনেকে একমত হবেন। গণস্বাস্থ্য বাংলাদেশে দীর্ঘদিন যাবত সুনামের সহিত ব্যবসা করে আসছে। ছোট কাল থেকে দেখে আসছি সরকারি হাসপাতাল গুলোতে গণস্বাস্থ্যের ঔষধ দেয়া হতো। সেই থেকে এখনো দেখি অন্য কম্পানি থেকে গণস্বাস্থ্যের ঔষধের দাম কম বা সস্তা এটা বাস্তবতা।
বাংলাদেশে সরকার প্রধান এই করোনার সময়ে একটা সুন্দর বক্তৃতা থেকে বাদ যাচ্ছেন।এই বক্তব্য দিতে পারলে বাংলাদেশ বিশ্বের পাঁচ-সাতটি দেশের মধ্যে একটি দেশের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য আসতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা আরো বৃদ্ধি পেত।কারণ বাংলাদেশ করোনা কিট আবিষ্কার করেছে, কোন কম্পানি আবিষ্কার করেছেন সেটা মূল বিষয় হতো না, প্রধান মূল বিষয় হতো বাংলাদেশ করোনা কিট আবিষ্কার করেছে। বিশ্ব বাসি দেখতো করোনা কিট আবিষ্কারক হিসেবে সফল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে আরো একটা পরিচিত লাভ করতো।
কারণ বিশ্ব যখন স্বাভাবিক থাকে তখন বড় বড় দেশের নেতাদের বক্তৃতা ছাড়া আর কোন নেতার বক্তৃতা মানুষ গ্রহণ করে না।
তবে বর্তমান বিশ্ব করোনা ভাইরাস এর কারণে থমথমে ভাব।এখন সারা বিশ্বে প্রধান আলোচনা করোনা,বিষয় হলো করোনার কিট কে বা কোন দেশ আবিষ্কার করলো, করোনা ঔষধ কে আবিষ্কার করলো, করোনা টিকা কে আগে আবিষ্কার করেছে।কে আগে সফল হলো,কার আগে কে সফলতা প্রকাশ করে,কার টা কত অল্প সময়ে সফল হল, সেই খবরাখবর বিশ্ববাসী আগে গ্রহণ করছে।আর বিশ্ব নেতারা প্রত্যেকে তাদের দেশের জনগণের চিকিৎসা সেবা করার জন্য,নিজ নিজ দেশের জনগণের চিকিৎসার্থে করোনা কিট,টিকা, ঔষধ, ভেন্টিলেশন, বস্ত্র ইত্যাদি অন্য দেশ থেকে সংগ্রহ করবে।
বাংলাদেশের সফল কিট নিয়ে যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের মাধ্যমে বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারতেন,তবে বাংলাদেশের বড় সুনাম অর্জন হতো। বাংলাদেশের এই করোনা কিট একশত পঞ্চাশটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভাবে সাপ্লাই দিতে পারতো।এতে দেশে বড় মুনাফা চলে এসে অর্থনীতি সচল হতো।এই কিট টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি দেশের ভিতরে প্রচুর চলবে।যা বহির্বিশ্বে প্রতিদিন আনুমানিক পাঁচ লাখ সাপ্লাই দেয়া সম্ভব হবে ধারণা।
প্রশ্ন আসতে পারে কেন বড় বড় দেশ থেকে না নিয়ে বাংলাদেশে থেকে সংগ্রহ করবে।
বর্তমান বাজারে যে কিটগুলি আছে, সেগুলির নমুনা সংগ্রহ করা হয়, মুখের লালা , নাকের মিউকাস মেমব্রেন থেকে। এতে তিনি সংগ্রহ করে থাকেন, তার সংক্রামিত হয়ে যাবার ঝুঁকি বেশি। কারণ-রোগি যখন নিঃশ্বাস ত্যাগ করে,তখন সংগ্রহকারীর দিকে নিঃশ্বাস যায়।এতে করে সংক্রামিত বেশি হবে।
বাংলাদেশে গণস্বাস্থ্যের কিট দিয়ে পরীক্ষা করা হয় রক্ত থেকে।হাত থেকে রক্ত সংগ্রহ করে বলে, মুখের মধ্যে মার্কস পড়িয়ে নেয়া যায়,বা অনেকেই পড়ে আসে।তাই সহজ পন্থায় ও সংক্রামিত হয়ে যাবার ভয় কম থাকে। বাংলাদেশ বা বিশ্বের যে কোন ডিপ্লোমা ট্যাকনেশিয়ান পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষা করে ফেলতে পারবেন। এই পন্থা সহজ ও কার্যকর।কাজেই বাংলাদেশে প্রতিটি উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্স ও জেলা হাসপাতাল এবং প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে সহজে পরীক্ষা করা যাবে। করোনা কিটের অনুমোদন দিলে,সহজে অধিক পরিমাণ মানুষের পরীক্ষা করা যাবে।
করোনা কিট দিয়ে পরীক্ষা করলে কি উপকারে হবে?
ক) কিটের পরীক্ষা করে অল্প সময়ে ফলাফল প্রকাশ পায়।
খ) যে রক্ত সংগ্রহ করবে ,তার সংক্রামিত হবার ঝুঁকি কম থাকে।
গ) অল্প খরচে করা যাবে,তাই যে কোন মানুষ ইচ্ছে করেই তার নিজের খরচে পরীক্ষা করে ফেলতে পারবেন।
ঘ) প্রতি উপজেলায় চার থেকে পাঁচ জায়গায় পরীক্ষা করার সুবিধা থাকলে, ব্যক্তিগত ভাবে পরীক্ষা করে যাবে এবং
এক ব্যক্তি একবার পরীক্ষা করার পর সমস্যা দেখা দিলে সে আবার পরীক্ষা করে নিতে পারবেন কিট পদ্ধতিতে।
ঙ) একজন রোগি ডাক্তারের কাছে আসলে,প্রথমেই ল্যাবে রক্ত দিয়ে,প্রথমে করোনা টেষ্টের মাধ্যমে ফলাফল নিয়ে,পরে অন্য সমস্যার পরীক্ষা করলে,অন্য কোন লোকজন আক্রান্ত হবে না। তখন রোগি হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে।
কাজেই এই কাজগুলি সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করে ফেলতে পারলে, বাংলাদেশের করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন,নতুবা ঢাকার বস্তি এলাকায়, গাজীপুর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় করোনা আক্রান্ত হয়ে গেলে ,তা সামাল দেয়া খুবই বিপদজনক হয়ে পড়বে।
বাংলাদেশ সরকারের সাথে যারা সংযোগ স্থাপনে আছেন, আমার প্রবন্ধ পড়ে থাকলে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাংলাদেশের মানুষের উপকৃত হবে। ধন্যবাদ।