জিম করার উপকারিতা ও অপকারিতা।জিম Supplements খাওয়ার সঠিক নিয়ম ।জিম এর খাদ্য তালিকা



জিম করার উপকারিতা ও অপকারিতা

জিমে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে, মন ভালো থাকে এবং সামগ্রিকভাবে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। কিন্তু জিমের সব দিকই কি শুধু ইতিবাচক? জিম করার কি কোনো অপকারিতাও আছে? এই আর্টিকেলটিতে আমরা জিম করার উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটিই বিশ্লেষণ করবো এবং জিম করার আগে-পরে খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

জিম করার আগে কী খাওয়া উচিত

খালি পেটে অথবা অতিরিক্ত ভরা পেটে কখনোই জিম করা উচিত নয়। জিম করার আগে হালকা জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।  সকালে জিম করতে যাওয়ার আগে আপনি হালকা কিছু খাবার গ্রহণ করতে পারেন যেমন– দুধ, কলা, আপেল, বাদাম, ব্রাউন ব্রেড ইত্যাদি।

 

খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জিমে যাওয়া উচিত নয়। খাবার খাওয়ার পরে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর জিমে যেতে হবে। না হলে, আপনার হজমে সমস্যা থেকে শুরু করে পেটে ব্যথা পর্যন্ত  হতে পারে।

জিম করার পর কী খেতে হবে

ওয়ার্কআউট শেষ করার ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান। জিম এর পরে পুষ্টিকর খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। এটি শরীরকে শক্তি দেয় এবং মাসল গঠনে সাহায্য করে। চিকিৎসক বা অভিজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রোটিন সমৃদ্ধ জিম সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত ।

 

জিম Supplements কি ?

জিম সাপ্লিমেন্টস হলো এমন কিছু খাবার যা আমাদের শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে। এগুলো সাধারণত বিভিন্ন খাবারের নির্যাস বা সংশ্লেষিত উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়।

বডি বিল্ডিং বা মাসল গ্রোথ এর জন্য সাপ্লিমেন্টস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ব্যায়ামের পর শরীরের পেশি গঠন ও মেরামতের জন্য অনেক পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের প্রয়োজন হয়। সাপ্লিমেন্টস এই পুষ্টিগুণ গুলো সরবরাহ করে।

উদাহরণ: Whey Protein, Creatine, Vitamin D , Calcium

সহজ কথায় সাপ্লিমেন্টস হলো আমাদের খাবারের অতিরিক্ত পুষ্টি যোগান দেওয়ার একটি উপায়। বিশেষ করে, যারা বডিবিল্ডিং করেন তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী।

Gym Supplements খাওয়ার উপকারিতা

Weightlifting  করার সময় Muscle - এর ক্ষয় হয় । Weightlifting  করার ৩০ মিনিটের ভিতর Supplements খেলে দ্রত সেই ক্ষয় পূরণ হয় । ফলে অধিক Muscle Grow করে ।

     Creatine Blood Cell - এ ATP supply করে । ফলে শক্তি বৃদ্ধি হয় ।

     Vitamin D শরীরে উপকারী testosterone hormone - এর পরিমাণ বাড়ায় এবং ক্ষতিকর Cortisol hormone - এর পরিমাণ কমায় ।

      Calcium শরীরের হাড়ের ক্ষয় রোধ করে এবং হাড় শক্ত করে ।

এরকম আরো বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন জিম সাপ্লিমেন্ট রয়েছে। বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন আসল Gym Supplements Arogga মেডিসিন ষ্টোর থেকে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।

জিম Supplements খাওয়ার সঠিক নিয়ম

supplements - যদি সঠিক নিয়মে গ্রহণ করা না হয়, কিছুটা ক্ষতি হতেই পারে । Workout  শেষ করার ৩০ মিনিটের ভেতর Supplements খেতে হবে। Pre workout মিল হল ব্যায়াম করার আগে খাওয়া যে খাবারটি আপনাকে শক্তি দেয় এবং ব্যায়ামের সময় আপনার শরীরকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।

সাপ্লিমেন্টস শুধুমাত্র একটি পরিপূরক। সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি সাপ্লিমেন্টস গ্রহণ করা উচিত। কোনো সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করার আগে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।

 

জিম Supplements - এর Side effect

আপনি যদি সুস্থ আর স্বাভাবিক হোন আর Supplements যদি সাধারন হয়, তাহলে কোনও Side Effects নাই ।

কিন্তু যদি আপনি অসুস্থ হয়ে থাকেন এবং আপনার শরীর ঠিক মতো Protein Absorb করতে পারে না । তাহলে Side effect হবে । আর supplements genuine কি না, check করে নিবেন। নকল supplements গ্রহণ করলেও side effects হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা রয়েছে। তাই যে কোনো সাপ্লিমেন্টস নেয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসক অথবা একজন অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

জিম করার উপকারিতা

জিম করলে শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই স্বাস্থ্য ভালো থাকে। জিম করার উপকারিতা: শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, ওজন কমানো, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো, মেজাজ ভালো রাখা, শক্তি বাড়ানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ঘুমের গুণগত মান উন্নত করা, দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমানো।

শারীরিক উপকারিতা

হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোকের মতো জটিল রোগের ঝুঁকি কমায়। হজম শক্তি বাড়ায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

মানসিক উপকারিতা

     ঘুম ভালো করে, মস্তিষ্ক ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।

     স্ট্রেস কমায়, উদ্বেগ দূর করে।

     আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন প্রফুল্ল থাকে।

জিম করার অপকারিতা

জিম করার অপকারিতা- পেশিতে চাপ, ব্যথা, শরীর দুর্বলতা, ক্লান্তি, একঘেয়ে ব্যায়ামের ফলে শারীরিক সমস্যা ইত্যাদি।

      শারীরিক জটিলতা: হঠাৎ করেই অনেক বেশি ব্যায়াম করলে শরীরে অতিরিক্ত চাপ পড়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। মাত্রাতিরিক্ত ব্যায়ামের ফলে পেশীতে চাপ পড়ে এবং দীর্ঘদিনের ব্যথা, অন্যান্য শারীরিক জটিলতা হতে পারে।

     শরীর দুর্বল: ব্যায়ামের পর যদি সঠিক খাবার না খাওয়া হয় তাহলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।

     ক্লান্তি: ব্যায়ামের পর যদি পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া হয় তাহলে শরীর পুনরুদ্ধার হতে পারে না এবং ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।

     একঘেয়ে ব্যায়াম: প্রতিদিন একই ধরনের ব্যায়াম করলে শরীরের বিভিন্ন অংশে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

     পেশিতে আঘাত: ইলেকট্রিক মাসল স্টিমিউলেটর যন্ত্র ব্যবহার করলে পেশিতে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে।

জিম করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং একজন প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম করুন।

ব‍্যায়াম করার সঠিক বয়স

জিম করার জন্য কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই। এটি একটি অভ্যাস, যা যে কেউ যে কোন বয়সে গড়ে তুলতে পারে। তবে, সাধারণত ১৭-১৮ বছর বয়সের দিকে এই অভ্যাস গড়ে তোলা সহজ হয়।

ছোট বাচ্চাদের শরীর পুরোপুরি বিকশিত না হওয়ায় তাদের জন্য জিমের পরিবেশ অনুপযুক্ত হতে পারে। বয়স্কদের শরীরের সহনশীলতা কম থাকে। তাই তাদের জন্য হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করা উচিত।

জিম এর খাদ্য তালিকা

যারা জিম করে তাদের প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এতে শরীরের পেশি গঠন, ক্ষতিগ্রস্ত পেশি মেরামত ও শক্তি সঞ্চয় হয়।

     ভাত: অল্প পরিমাণে সাদা ভাত খাওয়া যেতে পারে। জিমের পর শরীরে শর্করার ঘাটতি পূরণ করে।

     ড্রাই ফ্রুটস ও বাদাম: প্রচুর প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ। এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে।

     চিকেন: প্রোটিনের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। বডিবিল্ডিংয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

     ফল: বিশেষ করে কলা ও আপেল। পুষ্টিগুণে ভরপুর।

     টক দই: ভালো প্রোটিনের উৎস। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

     লেবু: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলিয়ে দেয়।

জিম করার রুটিন

জিম করার রুটিন ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। আপনার ফিটনেস লক্ষ্য, শারীরিক অবস্থা এবং সময়ের উপর নির্ভর করে রুটিন তৈরি করতে পারেন। তবে কিছু সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করে আপনি একটি কার্যকর রুটিন তৈরি করতে পারেন।

একটি ভালো জিম রুটিনের কার্যক্রম

     ওয়ার্ম আপ: ব্যায়াম শুরুর আগে ৫-১০ মিনিট ওয়ার্ম আপ করা খুবই জরুরি। এতে পেশীগুলো গরম হয়ে ওঠে এবং আঘাতের ঝুঁকি কমে।

     কার্ডিও: হার্ট রেট বাড়ানোর জন্য দৌড়ানো, সাইক্লিং, সাঁতার ইত্যাদি করা যেতে পারে।

     স্ট্রেংথ ট্রেনিং: পেশি গঠন এবং শক্তি বাড়ানোর জন্য ওজন তোলা, পুশ আপ, স্কোয়াট ইত্যাদি করা হয়।

     কোর এক্সারসাইজ: কোর মাসল শক্তিশালী করার জন্য প্ল্যাঙ্ক, রাশিয়ান টুইস্ট ইত্যাদি করা যেতে পারে।

     কুল ডাউন: ব্যায়াম শেষে ৫-১০ মিনিট স্ট্রেচিং করা হাঁপানি কমাতে এবং পেশীকে শিথিল করতে সাহায্য করে।

 

উপসংহার

আমরা দেখেছি যে জিম করার ফলে শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যই ভালো থাকে তা নয়, মানসিক স্বাস্থ্যও উন্নত হয়। স্ট্রেস কমে, মন প্রফুল্ল থাকে এবং ঘুম ভালো হয়। এছাড়াও, জিম করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে যায়।

তাই আজই থেকে জিম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং একটি সুস্থ ও সুন্দর জীবন উপভোগ করুন।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.