একটি অবিস্মরণীয় সন্ধ্যা
(২৯ জুলাই ২০২৪, সোমবার)
...
১৯৭১ সনে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমি ও আমার পিঠাপীঠি বড় বোন শেরপুর হাই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। খরমপুর আমাদের বাসা থেকে শেরপুর হাই স্কুল বেশ দূরে অবস্থিত। আমরা স্কুলে যাতায়াতের পথে মিছিল দেখতাম এবং বিভিন্ন স্লোগান শুনতাম। আমি বাসায় ফিরে সেসব স্লোগান চেঁচিয়ে বলতাম। যুদ্ধ শুরু হলে আমরা শহর থেকে গ্রামে প্রথমে নানার বাড়ি ও পরে দাদার বাড়ি চলে গেলাম। দাদার বাড়ির পেছনে একটি বিরাট বাঁশঝাড় ছিল। সেখানে একদিন একদল মুক্তিযোদ্ধা আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের সবার হাতে বন্দুক ছিল। সকালে তাঁদের পান্তা-ভাত খেতে দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের লবণ প্রয়োজন হলে আমি এক মুঠো লবণ নিয়ে গিয়েছিলাম। সুতরাং শিশু হলেও আমি মুক্তিযোদ্ধাগণের সহযোগী ছিলাম।
.
শিক্ষক হিসেবে শেরপুর জেলায় আমার বাবার অনেক সুনাম ছিল। সেসময় এক-নামে বাবাকে সবাই চিনতেন। শেরপুর জেলার শ্রেষ্ঠ সন্তানের নামের তালিকার শীর্ষে তাঁর নাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূ-গোল বইতে ছিল। যুদ্ধ চলাকালীন বাবার একজন ছাত্রকে আল-বদররা হত্যার জন্য ধরে নিয়ে যায়। সেই খবর পেয়ে বাবা ছুটে যান এবং তাঁকে মুক্ত করে আনেন। বাবার সেই ছাত্র এখনও বেঁচে আছেন। তিনি একদিন আমাকে শেরপুর নিউ মার্কেট মোড়ে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, ‘তুমি ভুলে যেয়ো না যে আমরা আট ভাই (আমরা সাত ভাই এবং তিনি মিলে আট ভাই বুঝিয়েছেন)। কারণ স্যার তোমাদের মতোই আমাকে প্রাণ দিয়েছেন’। এই ঘটনা দুটো উল্লেখ করার কারণ বলছি।
.
বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে অস্থিতিশীল ও অনিশ্চয়তায় ভরা এক বিদঘুটে অবস্থা বিরাজ করছে। সরকারি দল, বিরোধী দল, মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী অর্থাৎ জনজীবনে কারও স্বস্তি নেই। এদেশে যাদের সন্তান আছে তারাই আতঙ্কিত। হয় সন্তানের জীবনের শঙ্কা, নয় গ্রেফতার আতঙ্ক। অনেকের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। অনেকে আল্লাহ্ পাকের দরবারে কায়মনোবাক্যে এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য ফরিয়াদ জানাচ্ছে। আমিও সেই দলে আছি। কারণ আমার তিন মেয়ে বাইরে অবস্থান করছে। দুই মেয়ে চাকরি করছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। ওর অনেক সহপাঠী মিথ্যা মামলা, সশস্ত্র হামলা, গুম ও খুনের ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে। আমারও রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে না।
.
আজ ২৯ জুলাই ২০২৪, সোমবার দুপুরে কলেজ থেকে ফিরে যখন বিশ্রাম নিচ্ছিলাম তখন (সম্ভবত ১৫৩০ থেকে ১৫৫০ ঘটিকার মধ্যবর্তী সময়ে) বাসার অদূরে সদর রাস্তা থেকে বাইরের লোকজনের হৈ চৈ কানে এলো। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম যে, বাইরের দুই দল ছাত্রের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। কলেজ এ্যাডজুটেন্টের সঙ্গে আমি তৎক্ষণাৎ কথা বলে ক্যাডেটদের নিরাপত্তার স্বার্থে বৈকালিন খেলাধুলা বাতিল করলাম এবং তাদের হাউসে অবস্থানের নির্দেশ দিলাম। তাছাড়া আমার সহকর্মী ও অন্যান্যদের ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে বারণ করে ভাইবার এ্যাপস-এর মাধ্যমে একটি ক্ষুদেবার্তা প্রেরণ করলাম।
.
কিন্তু বিকেল ১৬৪৫ ঘটিকায় পুনরায় হট্টগোল কানে এলো। আমি ১ নং গেইটে মোবাইলে কল করলাম। সেই মোবাইল ব্যস্ত ছিল বিধায় ২ নং গেইটে মোবাইলে কল করলাম। সেখান থেকে নিরাপত্তা প্রহরী জানালো যে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের কিছু ছাত্র-ছাত্রী মিছিল করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চল থেকে কোটবাড়ি বিশ্বরোডের দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি ১৬৫৫ ঘটিকায় কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের ২ নং গেইটের কাছে এলে সেই মিছিলে আক্রমণ করার জন্য একদল সশস্ত্র যুবক কোটবাড়ি এবং অপর একদল সশস্ত্র যুবক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যাল অঞ্চল থেকে এসে মিছিলটি দু-দিক থেকে ঘিরে ফেলে। সশস্ত্র যুবকদের হাতে রিভলবার ও শর্টগান ছিল এবং পথের দুই পাশেই সুউচ্চ দেয়াল থাকায় মিছিলের ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকে প্রাণভয়ে কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এবং পনেরো জন ছাত্র কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের নিয়ন্ত্রণাধীন কাফেটারিয়ায় আশ্রয় নেয়।
.
সশস্ত্র যুবকরা ক্যান্টিনে আক্রমণ করার চেষ্টা করলে নিরস্ত্র পনেরো জন ছাত্র কাফেটারিয়ার কিচেন ও টয়লেটে আশ্রয় নেয়। কিন্তু তারা সেখানেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দেখে কিচেনের ছোট্ট দরজা দিয়ে কলেজের ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে। সেই খবর পাওয়া মাত্র কলেজ এ্যাডজুটেন্ট, মেডিক্যাল অফিসার ও আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলাম। সেখানে প্রথমে বহিরাগত ছাত্রদেরকে গেইট সংলগ্ন পরিত্যক্ত আবাসিক ভবনের একটি রুমে আশ্রয় দিলাম। তখন বিজিবি ও পুলিশের কয়েকটি গাড়ি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যেতে দেখে সশস্ত্র যুবকরা পালিয়ে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিত শান্ত হলে পথে আবারও লোকজন চলাচল শুরু করলো। মানুষের মাঝে ভীতি থাকলেও তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলো।
.
ততক্ষণে কলেজ এ্যাডজুটেন্ট কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের সার্বিক নিরাপত্তা ও উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশাসনের দায়িত্বশীল বিভিন্ন জনকে অবহিত করলেন। তারা আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার কথা জানালেন। আমি আশ্রিত ছাত্রদের সামনে দাঁড়ালাম। তখনও তারা ভয়ে কাঁপছিল। তাদের সবার মুখ কালো ও ছোট্ট দেখাচ্ছিল। তাদের মুখে কথা সরছিল না। আমি তাদের অভয় দিলাম। তবে তাদের ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে বলায় তারা করজোড়ে বললো, ইতোমধ্যে আমাদের একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তার পায়ে গুলি লেগেছে। (এই কথার সত্যতা পাওয়া গেছে। পরে কয়েকটি পত্রিকায় খবরটি ছাপা হয়েছে)। আমরা বাইরে গেলেই আমাদের মেরে ফেলবে। ওরা বিভিন্ন গলিতে ওঁৎপেতে আছে। আমাদের...
.
ওদের কণ্ঠ কাঁপছিল। চোখে অশ্রু ছলছল করছিল। চেহারা বিধ্বস্ত ছিল। দুই জনের পায়ে জুতা বা সেন্ডেল কিছুই ছিল না। দুই জনের গায়ে কাদার মাখামাখি ছিল। কারও কারও শার্টেও ময়লা লেগেছিল। একজনের কনুইয়ের উপরে ক্ষত ছিল। তারা সবাই পিপাসার্ত ছিল। যে কেউ তাদের দিকে তাকালে আবেগ-আপ্লুত হতে বাধ্য ছিল। কলেজ এ্যাডজুটেন্ট সামরিক বাহিনীর সদস্য হলেও তিনিও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লেন বলে মনে হলো। ওদের সবার কাঁধে কাপড়ের ব্যাগ ঝুলছিল। ওদের আমি আবারও আশ্বস্ত করে ওদের সঙ্গে কোনও অস্ত্রপাতি থাকলে সেসব বের করতে বললাম। ওরা কাঁধের ব্যাগ খুলে গুলতি ও মার্বেল বের করে দেখালো এবং বললো, আমাদের কাছে ছোট ছোট লাঠি ছিল। সেসব বাইরে ফেলে এসেছি।
.
ওদের হাত থেকে গুলতি ও মার্বেলগুলো কলেজের একজন মালিকে জমা নিতে বললাম। আমার ফিলিস্তিনের গাজাবাসী নিরস্ত্র যোদ্ধাদের কথা মনে হলো। বর্বর ইসরাইলি বাহিনীর অত্যাধুনিক মারণাস্ত্রের বিরুদ্ধে গাজাবাসী এসব গুলতি দিয়ে পাথর ছুঁড়ে। আর বাংলাদেশের ছাত্ররা পিস্তল-শর্টগানের বিপক্ষে এসব গুলতি ও মার্বেল নিয়ে যুদ্ধে নেমেছে। ওদের আমি নিরাপদে প্রস্থানের কথা চিন্তা করছিলাম। ওরা কোটবাড়ি পেরিয়ে গন্ধমতি অথবা শহরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আকুল আবেদন জানালো। ওদের এই আব্দারের প্রেক্ষিতে আমি মহাবিপদে পড়লাম। কারণ আমার সর্বাগ্রে ক্যাডেট ও কলেজের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হলো। আবার এসব শিশুদেরও পথে ছেড়ে দেওয়া মানে ক্ষুধার্ত হায়েনার মুখে ছেড়ে দেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলো।
.
ওদের জন্য আমি মুখ-হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করলাম। নাস্তা-পানি দিতে বললাম। ইতোমধ্যে ওদেরকে পুলিশ অথবা সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তরের জন্য কলেজ এ্যাডজুটেন্ট-এর নিকট দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ বার্তা প্রেরণ করলেন। এই খবর পেয়ে ছাত্ররা একেবারে মুষড়ে পড়লো। ডিজিএফআই-এর লোকজন এসে ছাত্রদের নাম ঠিকানা ইত্যাদি লেখা শুরু করলো। একজন তাদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করলো। এটা আমার জন্য কষ্টকর মনে হলো। কলেজ এ্যাডজুটেন্ট আমার সিদ্ধান্ত জানতে চাইলেন। ওদের আমি স্ব স্ব অভিভাবকের নিকট হস্তান্তরের কথা জানালে তিনি ও মেডিকেল অফিসার আমার প্রস্তাব সানন্দে মেনে নিলেন। আমি তৎক্ষণাৎ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আশ্রিত ছাত্রদের তাদের স্ব স্ব অভিভাবকের মুচলেকা গ্রহণপূর্বক হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত জানালে তাঁরও সদয় সম্মতি লাভ করলাম। এতে আমি দারুণ খুশি হয়ে ’আলহামদুলিল্লাহ্’ পাঠ করলাম। আমার মনোবল শত গুণ বেড়ে গেল।
.
সন্ধ্যার পরপরই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, এএসপি ও কতিপয় পুলিশসহ তিনটি গাড়ি এলো। তারা এই ছাত্রদের নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলেন। আমরা তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। তারা আশ্রিত ছাত্রদের তাদের হাতে (পুলিশ) অথবা সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার কথা জানালেন। এই প্রস্তাবের বিষয়টি আমাকে আবারও খানিকটা বিচলিত করলো। এটা আমার কাছে নতুন বিপত্তি মনে হলো। আমি পুলিশ অথবা সামরিক বাহিনীর পরিবর্তে আশ্রিত ছাত্রদের স্ব স্ব অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানালাম। আমার এই সিদ্ধান্তকে আগত নির্বাহী মেজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তা মেনে নেওয়ায় পুনরায় ’আলহামদুলিল্লাহ্’ বলে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
.
আশ্রিত ছাত্রদের মোবাইলে কল করে স্ব স্ব অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করে কলেজে এসে মুচলেকা দিয়ে তাদের গ্রহণ করার জন্য আমি নির্দেশ দিলাম। যাদের পায়ে জুতা ছিল না তাদের আমার ছেলে তাসনীফের সেন্ডেল দিতে চাইলেও তারা শুধু ধন্যবাদ জানালো এবং তা নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলো। চারজন ছাত্র গন্ধমতিতে একটি ছাত্রাবাসে বাস করে। তাদের অভিভাবকের সম্মতিতে (মোবাইল কলের মাধ্যমে) অপর অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়ার কথা জানালাম। তারা তাতেই সম্মত হলো। রাত সাড়ে আটটার মধ্যে কয়েকজন অভিভাবক এলেন এবং রাত পৌনে নয়টার মধ্যে অভিভাবকগণ তাদের পুত্র/পোষ্যকে নিয়ে গেলেন। তারা যে মুচলেকা দিলেন তাতে একটি বাক্য লেখা ছিল, আমার পুত্র/পোষ্যকে সম্পূর্ণ সুস্থ ও অক্ষত অবস্থায় গ্রহণ করলাম।
.
এই অঞ্চলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছিল। কলেজ গেইটে নিরাপত্তা প্রহরী বৃদ্ধি, কাফেটারিয়া সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে সিলগালার নির্দেশনা প্রদান এবং ক্যাডেটদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য হাউসে শিক্ষকদের তদারকি বৃদ্ধি করলাম। অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার পর নিজকে খুব হালকা মনে হলো। একটি প্রশান্ত মন নিয়ে বাসায় ফিরে এলাম।
.
রাত প্রায় নয়টা। দুপুরে ভাত খেয়ে শুয়েছিলাম। বিকেল ১৬৫৫ ঘটিকায় অপ্রত্যাশিত ঘটনার খবর পেয়ে পড়িমরি করে ছুটে গিয়েছিলাম। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে এক বিন্দু পানি খাওয়ার কথাও মনে আসেনি। আসর ও মাগরিব নামাজ আদায় করা হয়নি। আমি বাসায় ফিরে তাসনীফ ও গিন্নিকে উদ্বিগ্ন দেখতে পেলাম। ছোট মেয়ে মোবাইলে কল করে আমার সাহসের তারিফ করে বললো, তুমি খুব সাবধানে থেকো আব্বু। ক্যাম্পাসের বাইরে যেয়ো না। নইলে তোমার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।
.
ছোট মেয়ে এই ‘ঝুঁকি’র কথা বলায় আরও একটি ঝুঁকির কথা মনে পড়লো। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে একটি জঘন্য অপরাধের জন্য দুইজন ক্যাডেট বহিস্কার করা হয়। তখন আমি একাধারে ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ, খায়বার হাউসের হাউস মাস্টার ও সংঘটিত সেই জঘন্য ঘটনার তদন্ত কমিটির সভাপতির দায়িত্বপালন করেছিলাম। যখন ক্যাডেটদের অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর করা হয় তখন একজন অভিভাবক অধ্যক্ষ মহোদয়ের অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনি শহরে যাবেন না? তখন দেখে নেবো।
.
সেই অভিভাবকের হুমকি শুনে আমি নির্ভয়ে হেসেছিলাম। কারণ আমি ঐ ঘটনার যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছিলাম এবং তদন্তও নির্ভুল ছিল। আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের কারও জীবনই ঝুঁকিমুক্ত নয়। আমরা সর্বদাই কোন না কোন ঝুঁকির সম্মুখীন হই। এই ঝুঁকির ঝক্কি মোকাবেলার নামই জীবন। আর অন্য ঝুঁকি না থাকলেও মৃত্যু ঝুঁকির ঊর্ধ্বে কেউ নই। এটা কারও ঠেকানোর সাধ্য নেই। সুতরাং ছোট মেয়ের কথা শুনে শুধুই হাসলাম। কোন প্রত্যুত্তর করলাম না।
.
পরম করুণাময় অতি দয়ালু সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। আমীন।
.
ধন্যবাদ সবাইকে।
২৯-০৭-২০২৪