রোজা ভেঙ্গে রক্তদান
মলিন কুমার সাহা
পশ্চিমবঙ্গের
বীরভূম জেলার লাভপুরের বাসিন্দা শেখ রতনের ৩ বৎসর ৯
মাসের শিশুপুত্র থেলাসেমিয়ায় আক্রান্ত। বোলপর হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। শিশুটির রক্তের গ্রুপ
" ও নেগেটিভ " (O Negative)। এই গ্রুপের
রক্ত
এমনিতেই
কম পাওয়া যায়। শিশুটির পিতা শেখ
রতনকে
বলা হয় রক্ত জোগাড়
করে আনতে। কিন্তু
তিনি
৩ দিন ধরে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক ঘুরে
রক্ত
জোগাড়
করতে না পেরে হতাস
হয়ে পড়েছিলেন।
আংশিক
লক ডাউন ও করোনা রোগের
কারণে
রক্তদান
শিবির না হওয়ায়, রক্ত
পেতে হিমসিম খেতে হচ্ছিল তাকে। এক শিক্ষকের মারফত
খবর
পেয়ে,
বোলপুর, জামবনির কলেজ পড়ুয়া ছাত্র, উনিশ বৎসর বয়সের শেখ হোসেন ৬ ই মে,২০২১
বৃহষ্পতিবার
দিন রোজা ভেঙ্গে শিশুটিকে রক্ত দান
করেন।
তার এই রক্ত দানে
শিশুটি জীবন সংকট
কাটিয়ে
উঠে। আমরা জানি রক্ত দান মহৎ দান।
পরোপকারী
শেখ হোসেন রোজা ভাঙ্গার কথা এক
এক
মুহূর্ত ও ভাবলেন না।
ভাবলেন শিশুটিকে বাঁচানোর কথা। এক পিতার করুণ,আর্ত, অসহায়
পিতার
মুখ তার সামনে "আল্লাহ তাআলার রহমতের দরজা খুলে দিল। রোজা ভাঙার জন্য
তিনি
সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ র কাছে ক্ষমা
প্রার্থণা
করলেন।
গুণাহ্ হওয়ার পরিবর্তে তার পরপারের সম্বল হিসাবে কিছুটা পূণ্য সঞ্চয় করে
রাখলেন।
তাই
বলতে ইচ্ছা করে :
যুগে যুগে শুনি
মহাপুরুষের বাণী।
ধর্মের চেয়ে মানুষ বড়
মানুষের তরে মানুষ
একই স্রষ্টার সৃষ্টি মোরা
স্রষ্টাকে ভয় মানি।
মানুষ
বাঁচলে তবে তো ধর্ম পালন
করবে। মনুষ্যত্বহীনতার যুগে মনুষ্যত্বের প্রতীক শেখ হোসেন প্রমান করে দিলেন যে, সেই মুহুর্তে শিশুটিকে
বাঁচানোই তাঁর ধর্ম। তার প্রতি শ্রদ্ধা ও
ভালবাসায়
আমার হৃদয়ে গভীর তৃপ্তি অনুভব করলাম। জাতি,ধর্ম,বর্ণ,গোত্রহীন সর্বশক্তিমান,
দীন
দুনিয়ার মালিক, আল্লাহ্ তাআলা ও ভগবানের কাছে
প্রার্থনা করি, জন্মে জন্মে যেন
এরকম
অকৃত্তিম, হদয়বান ভাই-বন্ধু পাই, সে হিন্দুই হোক
কিংবা মুসলমান কিংবা অন্য কেউ।
লেকটাউন,কলকাতা, ভারত।